পানাগড়কাণ্ডে ইতিমধ্যেই পুলিশ আটক করেছে অভিযুক্ত বাবলু যাদকে। অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে মামলার তদন্তও করছে পুলিশ। এর মাঝে অবশ্য পুলিশ দাবি করেছে, ইভটিজিংয়ের কোনও ঘটনা ঘটেনি। এদিকে বুধবার আবার দুর্গাপুর আদালতে গোপন জবানবন্দি দিলেন সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের গাড়িতে থাকা ৪ সঙ্গী। এই আবহে আনন্দবাজার পত্রিকার রিপোর্টে এবার দাবি করা হল, সুতন্দ্রার গাড়িতে থাকা প্রদীপ দত্ত দাবি করেছেন, সাদা গাড়িটি তাঁদের গাড়ি ধাক্কা দেওয়ার পর সুতন্দ্রাই সেটিকে ধাওয়া করার জন্যে বলেছিলেন। এই বয়ান সামনে আসার পর সুতন্দ্রার মা দাবি করেন, তাঁকে এর আগে এই কথা কেউ জানাননি। এদিকে আনন্দবাজারকে নাকি প্রদীপ জানিয়েছেন, তিনি গাড়ির পিছনে বসেছিলেন। তাঁর নজরে নাকি সুতন্দ্রাকে উত্যক্ত করার কোনও ঘটনা ঘটেনি। (আরও পড়ুন: আদালতে গোপন জবানবন্দি সুতন্দ্রার ৪ সঙ্গীর, পানাগড়কাণ্ডে ঠিক কী ঘটেছিল?)
আরও পড়ুন: বেলঘরিয়ায় রেললাইনের পাশে পড়ে প্রাক্তন বাম কাউন্সিলরের দেহ, তদন্তে GRP
এদিকে সহযাত্রীদের দাবি ঘিরে সন্দেহ বাড়ছে সুতন্দ্রার মায়ের মনে। তাঁর বক্তব্য, যদি গাড়ি চালানোর জেরেই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে সেটা আগে কেন বলা হয়নি? এদিকে গাড়ি অত দ্রুত গতিতে ছোটার সময় কেন কেউ চালককে ধীরে চালাতে বলেননি, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী। তাঁর এখন বক্তব্য, ‘কাউকেউ সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখতে পারছি না।’ (আরও পড়ুন: সোদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু ২ মহিলার, একজনের মৃতদেহ মিলল নৈহাটিতে)
এরই মাঝে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসিপি অভিষেক গুপ্ত দাবি করেছেন, পুলিশের তদন্ত প্রায় শেষের পথে। এই আবহে শীঘ্রই সংবাদমাধ্যমকে পুরো বিষয়টি জানানো হবে বলে দাবি করেন তিনি। উল্লেখ্য, এর আগে এই ঘটনায় ইভটিজিংয়ের অভিযোগ উঠলেও তা উড়িয়ে দিয়েছিল পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে পুলিশের দাবি ছিল, নিহত তরুণীর গাড়িই অন্য গাড়িতে তাড়া করেছিল। অবশ্য এই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এদিকে ২৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে অভিযুক্ত বাবলু যাদবকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে কেন বাবলুকে আটক করতে পুলিশের এত সময় লাগল না নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রথমে একে রেষারেষির ঘটনা বলেও পুলিশকে কেন অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করতে হল প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। (আরও পড়ুন: ফের ভূমিকম্প, এবার ভোররাতে কেঁপে উঠল অসম এবং বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল)
আরও পড়ুন: ঢাকা স্তব্ধ করার হুঁশিয়ারি, গভীর রাত পর্যন্ত পথে শিক্ষার্থীরা, শুরু নয়া আন্দোলন
এদিকে রিপোর্টে দাবি করা হল, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে পানাগড়ে পুরনো জিটি রোডে বুদবুদ থানা এলাকায় পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়েছিল সুতন্দ্রাদের গাড়িটি। সেখান থেকে তেল ভরিয়ে পানাগড়ের দিকে যাচ্ছিল সুতন্দ্রাদের গাড়িটি। তাদের সামনে ছিল সেই অন্য সাদা গাড়িটি। রিপোর্ট অনুযায়ী, পানাগড়ে ঢোকার মুখে সাদা গাড়িটি বাঁ দিকের ইন্ডিকেটর দেয়। জিটি রোডে ওঠার জন্যে সাদা গাড়িটি ইন্ডিকেটর দেওয়ার পরে সেটিকে ওভারটেক করতে যায় তরুণীর গাড়ি। সেই সময় দুই গাড়িতে ঘলা লেগেছিল। তরুণীর গাড়ির একটি চাকা তখন ডিভাইডারে গিয়ে ধাক্কা মারে। (আরও পড়ুন: শিবরাত্রিতে আমিষ খাওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারি,ছাত্রীর চুলের মুঠি ধরে টান)
সেই ঘটনার পরে সাদা গাড়িটি সেখানে না থেমে সোজা এগিয়ে যায়। আর তারপরই সেটির পিছন পিছন ছুটতে দেখা যায় সুতন্দ্রার গাড়িটিকে। পুলিশের দাবি, একটা সময় সাদা গাড়িটিকে ওভারটেক করে সুতন্দ্রাদের গাড়ি রাস্তা আটকে দাঁড়িয়েছিল। তবে সাদা গাড়িটি পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। তখন ফের সুতন্দ্রাদের গাড়ি পিছু নেয় সেই সাদা গাড়ির। সেই সময়েই একটি শৌচাগারে গিয়ে ধাক্কা দেয় তরুণীর নীল গাড়িটি। এতে যুবকদের সাদা গাড়িটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাদা গাড়িতে থাকা পাঁচ যুবক পালিয়ে যান সেখান থেকে। তরুণীর দুই সঙ্গীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, দু'জন থানাতেই ছিলেন। তরুণীর দেহ পাঠানো হয় হাসপাতালে। ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে সুতন্দ্রার সাথীরা অভিযোগ করেন, মত্ত যুবকদের দৌরাত্ম্যেই তাঁদের গাড়ি উল্টে গিয়েছিল। পরে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তরুণীর ৪ সঙ্গীকে ফের জেরা করেছিল পুলিশ।