দিনকয়েক ধরেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। অবশেষে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হল, এবার থেকে রাজ্যের পুরোহিতদের ভাতা দেওয়া হবে। যা আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'সনাতন ধর্মের ব্রাক্ষণরা দীর্ঘদিন ধরে পুজো করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা মন্দিরে মন্দিরে পুজো করেন। কিন্তু কোনওরকম সাহায্য তাঁরা পাননি। তাঁদের (পুরোহিতদের) মধ্যে একটি শ্রেণি আছে, যাঁরা খুব গরিব। সবাই তো আর ভালো পুজো, ভালো বিয়ে বা ভালো কাজ করার বায়না তো পান না। অনেকে আছেন, খুব গরিব। খুবই গরিব। গ্রামেগঞ্জে মাসে একটা পুজো পেলেন হয়তো। তাতে তাঁদের চলবে না।'সেই পুরোহিতরা তাঁর সঙ্গে তিন-চারবার দেখাও করেছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, যে ব্রাক্ষণরা দরিদ্র, তাঁদের সাহায্যের জন্য আবেদনও করা হয়েছিল। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে পুরোহিতদের মাসিক ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুজোর মাস থেকে ১,০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। পাশাপাশি যে পুরোহিতদের বাড়ি নেই, তাঁদের বাংলা আবাস যোজনার আওতায় ঘর দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। প্রাথমিকভাবে ৮,০০০ পুরোহিতের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণায় অবশ্য ভোটের অঙ্ক দেখছে রাজনৈতিক মহল। তাঁদের মতে, রাজ্যে ইমাম-মোয়াজ্জিনদের ভাতা চালু হলেও এতদিন পুরোহিতরা সেই ভাতা পেতেন না। তা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে বারবার তোষামদের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। পুরোহিতদের সংগঠনের তরফেও অসন্তোষ প্রকাশ করা হযেছিল। যা আগামী বছর বিধানসভা ভোটে বড়সড় ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠতে পারত। তার ফলে আখেরে সুবিধা পেত বিজেপি। তাই গেরুয়া শিবির যাতে বাজিমাত করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে মমতা সরকারও পুরোহিত ভাতা শুরু করেছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য। যদিও পুরোহিত ভাতার সঙ্গে 'অন্য কোনও সম্পর্ক' নেই বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তাঁরা সমাজে-সমাজে যোগ রাখেন। আমাদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন, সেজন্য (সাহায্য করা হচ্ছে)। এটা কিন্তু অন্যভাবে দেখবেন না। এখানে যদি আমায় পাদ্রিরাও বলেন, যাঁরা খ্রিশ্চান আছেন, তাঁরা যদি সাহায্য চান, তাহলে (তাঁদেরও) আমরা সাহায্য করব।’