শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছাড়ার আগে তাঁর ক্ষোভ সামলানোর জন্য মধ্যস্থতকারীর কাজ করেছিলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সাংসদ সৌগত রায়। আর এবার শুভেন্দু বিজেপি–তে যোগ দেওয়ার পর তাঁর গড়ে গিয়েই তাঁকে কড়া ভাষায় বিঁধলেন সৌগত। শুভেন্দুর নাম না করে তিনি বলেন, ‘যাঁরা গান্ধীবাদী সতীশ সামন্তর কথা বলে, সেই সব সুবিধাবাদীরাই এখন নাথুরাম গডসে, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দলে যোগদান করছেন। এটা মেদিনীপুরের মানুষ ভুলবে না। সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী শক্তির সঙ্গে হাত মেলালে মেদিনীপুরের মাটিতে কেউ জায়গা পাবে না।’বুধবার কাঁথিতে বিশাল মিছিল শেষে ছিল তৃণমূলের সভা। এদিনের সভা বা মিছিলে অধিকারীর পরিবারের কাউকে দেখা যায়নি। শিশির অধিকারী আগেই জানিয়েছিলেন যে শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোনও কর্মসূচিতেই তিনি থাকতে পারবেন না। তবুও এদিন মিছিল বা সভায় কোনও ভাটা পড়েনি। সেই সভামঞ্চে দাঁড়িয়েই এদিন সৌগত রায় বলেন, ‘এই মিছিল থেকেই প্রমাণ হল যে কাঁথি কোনও পরিবারের জমিদারি নয়। কে তৃণমূল ছেড়ে গেল তাতে কিছু যায় আসে না। আবার প্রমাণিত যে মমতার কোনও বিকল্প নেই।’সভায় উঠে আসে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথা। সৌগত রায়ের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে না গেলে সারা ভারতের শিরোনামে এই ঘটনা আসতই না। তাঁর দাবি, নন্দীগ্রাম আন্দোলনে শুভেন্দু অধিকারীর কৃতিত্বই নেই। দমদমের সাংসদের কথায়, ‘১৪ মার্চ রওনা হলেন মমতা। রাস্তায় আটকাল সিপিএমের লোকজন। মমতা রাতভর গাড়িতে থাকলেন। সকালে পৌঁছলেন নন্দীগ্রামের হাসপাতালে। সেদিন তিনি যদি নন্দীগ্রামে না যেতেন তবে এই ঘটনার কথা সারা ভারতের শিরোনামে আসত না। মমতা নেতৃত্ব না দিলে সিপিএম সরে যেত না।’ এর পরই শুভেন্দুর নাম না করে সৌগত রায়ের কটাক্ষ, ‘নন্দীগ্রামের আন্দোলন সুফিয়ানের মতো নেতারা করেছেন। কোনও সরস্বতীর বরপুত্র এগিয়ে আসেনি।’এদিনও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলে তাঁর নাম করেই সৌগত রায় বলেন, ‘মীরজাফরদের দলে নাম লিখিয়েছেন শ্রীমান শুভেন্দু। সিরাজদৌল্লা হেরে গিয়েছিলেন কিন্তু বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব হিসেবে তাঁকে মনে রেখেছে বাংলার মানুষ। কিন্তু উমিচাঁদ, জগৎশেঠ, মীরজাফরদের কোনও ঠাঁই ইতিহাসে নেই। এই লড়াই হল বাংলার অস্মিতা ও আত্মসম্মানের লড়াই।’ একইসঙ্গে সৌগত রায়ের দাবি, ‘বিধানসভায় বিজেপি ৯৯টির বেশি আসন পাবে ন। বাংলা নিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখছেন অমিত শাহ।’