রাজীব জয়সওয়ালআর্থিকভাবে চিনকে ঝাঁকুনি দিতে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে আমদানিকৃত দ্রব্যের ক্ষেত্রে কড়া নজরদারি চালাবে ভারত। নাম গোপন রাখার শর্তে দুই আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘উৎসের নিয়ম’ লঙ্ঘন করে ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশের মাধ্যমে ভারতে হুড়মুড়িয়ে চিনা দ্রব্য ঢুকে পড়ছিল। যে দেশগুলির সঙ্গে ভারতের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আছে।কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেন, ‘আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে শুল্ক বিভাগ নয়া যাচাই পদ্ধতির ব্যবহার করবে। তার ফলে মোবাইল ফোন, হোয়াইট গুডস (ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন-সহ ঘরোয়াভাবে যে বৈদ্যুতিন সামগ্রী ব্যবহার করা যায়) সেট-টপ বক্স, ক্যামেরা এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিন গেজেট-সহ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আওতায় আমদানিকৃত সমস্ত সরঞ্জাম আরও ভালোভাবে পরীক্ষা করার পূর্ণ কর্তৃত্ব মিলবে।’গত ২১ অগস্ট একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ‘সেন্ট্রাল বোর্ড ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস’ (সিবিআইসি) জানায়, ২০২০ সালের ‘কাস্টমস (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ রুলস অফ অরিজিন আন্ডার ট্রেড এগ্রিমেন্ট) রুলস’ বা কারোতার (CAROTAR) মোতাবেক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় শুল্ক ছাড় পাওয়ার জন্য আমদানিকারককে বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। সেই বিজ্ঞপ্তির ব্যাখ্যা দিয়ে পরামর্শদাতা সংস্থা ইওয়াই ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, সুবিধানজনক শুল্কের হার পেতে আমদানিকারকদের উৎসের শংসাপত্র (CoO) পেশ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ঘোষণাপত্র দিতে হবে। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় তথ্য এবং নথি চাইতে পারে শুল্ক বিভাগ। সন্দেহ জাগলে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সুবিধাও না দিতে পারে বা পরে তথ্য যাচাইয়ের শর্তে প্রাথমিকভাবে ছাড়া হতে পারে।কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের চলতি বছরের সাধারণ বাজেটের ভাষণকে উদ্ধৃত করে প্রথম আধিকারিক জানান, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পর্যালোচনার জন্য বারবার সরকারকে জানিয়েছে শিল্পমহল এবং সেই চুক্তির অপব্যবহারে লাগাম টানার আর্জি জানিয়েছে। সীতারামন জানিয়েছিলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় বিধিবহির্ভূত সুবিধা নেওয়ার ফলে দেশীয় শিল্পের ক্ষেত্রে বড়সড় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেজন্য কড়া নজরদারির প্রয়োজন আছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয় এক আধিকারিক বলেন, ‘তদন্তে উঠে এসেছে যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতাভুক্ত দেশ থেকে আগত টিভি, মোবাইল ফোন, সেট-টপ বক্স, টেলিকম নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম, ধাতু উৎসের নিয়ম শর্ত পূরণ করছে না।’ গত পাঁচ বছরে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় যে ভুয়ো দাবি করা হয়েছে, তা একাধিকবার চিহ্নিত করেছে শুল্ক বিভাগ। যার মূল্য ১,২০০ কোটি টাকা।