প্রতি বছর ক্রমাগত বেড়ে চলেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রীতিমতো অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। তবে সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে তত বাড়বে মশাদের প্রাধান্য।
১০০ বছরে উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়বে পৃথিবীর তাপমাত্রা
লস আলমস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির একটি গবেষণা দল একটি মডেল তৈরি করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে মশাদের আধিক্য বাড়ছে এই পৃথিবীতে। মশার আধিপত্য যত বিস্তার হবে ততই ছড়াবে একাধিক অসুখ। আগামী ১০০ বছরে গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্ষা পরবর্তী সময়ে উষ্ণতা বাড়বে ০.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শীতকালে উষ্ণতা বাড়বে ১.১° সেলসিয়াস।
কী দেখা যাচ্ছে গবেষণায়
গবেষণায় যে ৯ টি মশার প্রজাতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেই প্রত্যেকটি প্রজাতি আগামী দিনে অর্থাৎ বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বোঝাই যাচ্ছে, পৃথিবীর জলবায়ু যত উষ্ণ হবে ততই মশা বাহিত রোগের পাদুর্ভাব বাড়বে। শুধু তাই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে মশারা নিজেদের স্থান পরিবর্তন করবে। যেমন ধরুন, নিরক্ষরেখার চারিপাশে অঞ্চল গুলি যখন অত্যাধিক গরম হয়ে উঠবে তখন মেরু অঞ্চলের দিকে নিজেদের স্থান পরিবর্তন করবে এই বিভিন্ন প্রজাতির মশা।
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্থান পরিবর্তন করবে মশা
মোট ৯ টি মশার প্রজাতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যার মধ্যে দেখা যাচ্ছে ৬ টি মশার প্রজাতি নিজেদের প্রয়োজনে বিভিন্ন অঞ্চলে স্থান পরিবর্তন করবে। আবার কিছু কিছু প্রজাতি এমন আছে, যাদের পক্ষে পৃথিবীর বাড়তে থাকা তাপমাত্রা আরও বেশি সুবিধেজনক হবে বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে।
কোন কোন মশার বৃদ্ধি ঘটবে
পৃথিবীর সবথেকে প্রাণঘাতী মশার ধরন যেমন চিকনগুনিয়া, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস, ইয়েলো ফিভার জিকা ভাইরাস সহ আরো বেশ কিছু প্রজাতির মশা আগামী দিনে উল্লেখযোগ্য ভাবে রোগ ছড়ানোর জন্য উপযোগী হয়ে উঠবে। আগামী দিনে পৃথিবীর বুকে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত এবং তাপপ্রবাহ মশার প্রজজনের হার বাড়িয়ে দেবে শতগুণ।
কমে যাবে ডেঙ্গু মশা
আজ থেকে ৬০ বছর পর পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এডিস মশা, যেগুলি ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ায় সেগুলি আগামী দিনে ভারতের টিকে থাকতে পারবে না। ভারত ডেঙ্গু মশার প্রজননের জন্য অতিরিক্ত গরম এবং শুষ্ক হয়ে উঠবে তাই ভারত থেকে বিদায় নেবে ডেঙ্গু মশা। তবে গবেষণায় এও জানা গেছে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০৮০ সালে আর দুই বিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবে।