ফের একবার আলোচনায় বাংলাদেশের পরিমনী। ২০২১ সালের ঘটনার ভিত্তিতে দায়ের হওয়া মামলায় সম্প্রতি পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশের আদালত। যদিও ইতিমধ্যেই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন অভিনেত্রী। তবে কেউ কেউ বলছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর কারণেই পরীর বিরুদ্ধে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এবার অভিনেত্রীর হয়ে সরব হলেন বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
ফেসবুকের পাতায় লম্বা পোস্টে পরীমনির হয়ে সুর চড়িয়েছেন তসলিমা। ঠিক কী লিখেছেন তিনি?
তসলিমার কথায়, পরীমনি নারী বলেই তাঁর পায়ে বার বার শিকল পরানোর চেষ্টা হচ্ছে। অভিনেত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতি ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তসলিমা লেখেন, ‘চিত্রনায়িকা পরীমণির ওপর আবার শুরু হয়েছে অন্যায় অত্যাচার। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় হারল্যান স্টোর নামের একটি কসমেটিক শোরুম উদবোধন করতে তাঁর যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এলেঙ্গার হেফাজতি ইসলামি দলের গুণ্ডারা তা হতে দেবে না। তারা হামলার হুমকি দিয়েছে, অগত্যা স্টোরের মালিক উদবোধনী অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। জিতে গেল হেফাজতে ইসলামি, এলাকার সব মসজিদ মাদ্রাসার পরজীবী মোল্লারা, জিতে গেল নারীবিদ্বেষ। টাঙ্গাইলে পরীমণির যাত্রাভঙ্গ করা ছাড়াও পরীমণির বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পরীমণি আওয়ামী লীগের কর্মী নন, তিনি বরং হাসিনা-পতনের আন্দোলনে আর সবার মতো সমর্থন জানিয়েছিলেন। ২৪এর স্বাধীন দেশে তাঁর পায়ে কেন শিকল পরানো হচ্ছে, তাঁকে কেন মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে? এর একটিই কারণ, তিনি নারী।’
তসলিমা আরও লেখেন, ‘জুলাই আন্দোলনের নেপথ্যে ছিল জামাত-শিবির, সন্ত্রাসী সংগঠন হিজবুত তাহরীর, এবং সমস্ত ইসলামী, জিহাদি, সন্ত্রাসী দল। এরা নিঃসন্দেহে সকলেই ভয়ঙ্কর নারীবিদ্বেষী। তারা, আজ বা কাল নারীর বিরুদ্ধে যাবেই, সে নারী তাদের মিছিলে থাকলেও, হাসিনা সরকারের পতনের জন্য তাদের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন দিলেও। ইসলামের নীতি আদর্শ জিহাদিরা মাথা পেতে বরণ করেছে। হাসিনাকে তাড়ানোর পেছনে তাদের একটাই উদ্দেশ্য ছিল, দেশে ইসলাম কায়েম করা, নারী নেতৃত্বের ইতি টানা , নারীকে ঘরবন্দি করা। স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ দূর করা তাদের আসল উদ্দেশ্য ছিল না, কারণ তারা নিজেরাই এখন স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। সারা দেশে খুন ধর্ষণ রাহাজানি, আগুন, লুণ্ঠন, জমি দখল ইত্যাদি অরাজকতা অবাধে চলছেই, সরকার ফিরেও তাকায় না। বরং ইসলামী বহুবিবাহের পক্ষে আইন তৈরি করা হয়েছে, এরপর আইন করে বাল্য বিবাহের অত্যাচারকে বৈধ করা হবে, ইতিমধ্যে সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা মুছে ফেলা হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতা না থাকা মানে ধর্মীয় আইন থাকা, ধর্মীয় আইন থাকা মানে পুরুষের আধিপত্য থাকা আর নারীর বিরুদ্ধে বিকট বৈষম্য থাকা।’
আরও পড়ুন-সৃজিতকে ছেড়ে এবার দেবের হাত ধরলেন! 'রঘু ডাকাত'-এ খলনায়ক হচ্ছেন অনির্বাণ?