শুরু থেকে বিতর্কিত বিষয়বস্তুর কারণে বিতর্কে রয়েছে জি বাংলার কার কাছে কই মনের কথা ধারাবাহিকটি। শুরুতে প্রোমোয় জোর দেওয়া হয়েছিল পাড়ার পাঁচ বউয়ের মধ্যেকার বন্ধুত্বের উপরে। কিন্তু ধারাবাহিক শুরু হতে না হতেই তা বদলে গেল। পাঁচ নারীর বন্ধুত্বের গল্প থেকে হয়ে গেল, এক মেয়ের শশুরবাড়িতে এসে স্বামী ও শাশুড়ির হাতে নির্যাতিত হওয়ার কাহিনি।
ধারাবাহিকে দেখানো হচ্ছে কলকাতা শহরের মেয়ে শিমুল। যদিও লেখাপড়ার থেকে নাচ-গানে বেশি ভালো। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায়, বাপ মরা মেয়েকে কলেজ শেষ করার পরই বিয়ে দিয়ে দেয় মা আর দাদারা। আর এসে পড়ে মফসসলের এক পরিবারে। যেখানে বাড়ির বউদের ভালোমন্দ খাওয়ার অধিকার নেই। স্বামী বা শাশুড়ির সম্মতি ছাড়া কিছু করারও অধিকার নেই। নেই নাচ-গান করার অধিকার। বাপের বাড়ি যাওয়ারও অনুমতি নেই। যেখানে বাড়ির বউয়ের মূল দায়িত্বই হল সংসারের সব কাজ করা। আর সঙ্গে অবশ্যই রাত্রে স্বামীকে দেওয়া যৌন সুখ।
সম্প্রতি দেখানো হল শিমুলের ইচ্ছের বিরুদ্ধেই তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করল স্বামী পরাগ। অনেক কাকুতি-মিনতি, চোখের জল ফেলার পরেও বৈবাহিক ধর্ষণের মুখে পড়তে হল এই চাকরি না করা বাড়ির বাউকে। আপাতত এই দৃশ্য নিয়ে চলছে জোরদার সমালোচনা। তা সে নির্মাতারা স্ক্রিনে যতই ডিসক্লেইমার দিক না কেন, ‘এই দৃশ্যটি গল্পের সৃজনশীল প্রয়োজনে দেখানো হয়েছে। মহিলাদের উপর কোনওরকম উৎপীরণ বা নিগ্রহের আমরা তীব্র নিন্দা করি।’

কার কাছে কই মনের কথা-র শিমুল আর পরাগের মধ্যেকার সেই বিতর্কিত দৃশ্য।
একাংশের মতে এটি ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’। আর এভাবে খুল্লামখুল্লা তা দেখানো মানে সমাজের উপর খারাপ প্রভাব ফেলা। সমাজে একটা খারাপ বর্তা পৌঁছে দেওয়া। যা কখনওই গ্রহণযোগ্য নয়। ধারাবাহিকের মূল উদ্দেশ্য, কখনই টিআরপি বাড়ানো হতে পারে না।
প্রসঙ্গত, কার কাছে কই মনের কথা-র ফুলশয্যার দৃশ্যও একইভাবে বিতর্ক কুড়িয়েছিল। কারণ দেখানো হয়েছিল শিমুলের শাশুড়ি ছেলে-বউয়ের মিলন আটকাতে শুধু শোওয়ার ঘরেই আসেনি। বউকে সোফায় পাঠিয়ে, ফুলের খাটে ছেলেকে জড়িয়ে ছেলের বুকে মাথা রেখে ঘুমোচ্ছে। তাই প্রশ্ন উঠেছিল কেন খাটে মা-ছেলেকেই শোওয়ানো হল, কেন শাশুড়ি বউমাকে নয়। বর্তমানেও দর্শকদের মনে জিজ্ঞাসা কেন বারবার ‘উস্কানি’ মূলক দৃশ্য দেখিয়ে বিতর্ক বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। বাড়ানোর চেষ্টা চলছে টিআরপি।