ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্টদের মতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোটা এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি। ঘরে বসে কীভাবে বাড়াবেন নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রইল তার সহজ কিছু উপায়। ‘ভিটামিনের রাজা’ সি এবং ডিসকল ধরণের ভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি যে কোনও কারও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। একই ভাবে একাধিক সাইট্রাস ফল এবং যেমন আমলা, লেবু, কমলা, জাম এবং অন্যান্য ফল ছাড়াও ডিমের কুসুম এবং মাশরুমে, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদিতে যথাক্রমে ভিটামিন সি ও ডি রয়েছে ভরপুর। এখনও পর্যন্ত যাঁরা কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের সকলকেই আই-ভি (ইনফ্রেভেনস থেরাপি) এর মাধ্যমে ভিটামিন সি দেওয়া হয়েছে। যার ফলে দ্রুত তরলগুলি সরাসরি শিরাতে প্রেরিত হয়। অতএব, অসুখ থাক বা না থাক, ভিটামিন সি ও ডি নিয়মিত হোক আপনার লাইফ স্টাইলে।‘মশলার রানি’ হলুদ,সঙ্গে গরম দুধএই সোনালি মসলার প্রচুর গুণ তাই প্রতিদিনের রান্নায়, স্বস্থ্য ভালো রাখতে এবং শুভ কাজেও হলুদ আবশ্যক। হলুদ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্যের জন্য সুপরিচিত। হলুদে উপস্থিত কার্কুমিন খুবই শক্তিশালী, ক্ষত এবং সংক্রমণ নিরাময়ে সহায়তা করে। এই কারণেই প্রায়শই হলুদের দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে'বেশিরভাগ মানুষে এটির সঠিক প্রয়োগ জানেন না। কাঁচা হলুদ বাটা বা গুঁড়ো জলে গুলে খাবেন না। পরিবর্তে হলুদ দুধে্র সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে, সেটা ফুটিয়ে তারপর হলুদের দুধ হিসেবে পান করুন। চাইলে এর সঙ্গে নারকেল তেলে কয়েকটা কালো মরিচ ফোড়ন দিয়ে সেটা মিশিয়ে খেতে পারেন।এক কোয়া রসুন ও তুলসিপ্রাকৃতিক অ্যান্টি-ভাইরাস জাতীয় খাবার বলতে তুলসি পাতা, রসুন, আদা এবং স্টার অ্যানিস (একটি মশলা যা অনেক রোগ প্রতিরোধে সক্ষম) এমন প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ভাইরাস জাতীয় খাবার যা সিজিনাল জ্বর এবং ফ্লু থেকে সুরক্ষা দেয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং শরীর থেকে রোগ জীবাণু ও বিষাক্ত পদার্থগুলি বের করার জন্য আদর্শ। এর পাশাপাশি নিয়মিত ৪/৫ টি তুলসি পাতা সেদ্ধ করে একটা পানীয় তৈরি করে খাওয়ার অভ্যেস করলে ইমিউনিটি তো বাড়বেই, এবং কোভিড আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে।আদা-আমলা-রসুন-স্টার অ্যানিস জন্মভূমি মূলত ভিয়েতনাম ও চীন দেশ হলেও এখন এশিয়ার বিভিন্ন দেশে স্টার অ্যানিস সহজলভ্য। তিন থেকে চার টুকরো স্টার অ্যানিস নিয়ে ভালো করে গরম করে ফুটিয়ে খেতে পারেন। আদা এবং আমলা বা আমলকীর রস খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের শরীরের জন্য। এই মিশ্রন খাওয়ার অভ্যেস করুন। একটি রসুনের কোয়া নিন, এটি থেঁতো করুন এবং পাঁচ মিনিটের জন্য খোলা অবস্থায় রাখুন। এর ফলে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে এর অ্যালিসিন নামক শক্তিশালী ঔষধি বৈশিষ্ট্য সক্রিয় হয় এবং তারপরে এটি খেতে পারেন। ঘরে পাতা দই এই কোভিড পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকরা নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার বা অ্যালকোহল ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন। হাত স্যানিটাইজার জীবাণুগুলি দূরে সরিয়ে দেয়, এবং প্রয়োজনীয় ভা্লো ব্যাকটেরিয়াও গ্রহণ করে, এবং রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। যা এই সময় খুবই প্রয়োজনীয়। ঠিক তেমনই দই একটি প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক, আমাদের দেহে ভালো ব্যাকটিরিয়া গঠনে সহায়তা করে। যদি কারণ নির্বিশেষে আপনার গলা ব্যথা হয় তবে দই খাবেন না, এতে আরও খারাপ হতে পারে। প্রতিদিন তাজা আমলকির রস পান করুনলিভার, কিডনির সমস্যা থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস সহ বহু রোগ সমস্যার সমাধানে আমলকী অপরিহার্য। আমলকীর মধ্যে যে ক্রোমিয়াম থাকে, তা অগ্ন্যাশয়ের জন্য খুবই উপকারী। এতে ইনসুলিন এবং শর্করার মাত্রাও সঠিক পরিমাণে বজায় থাকে।প্রতিদিন তাজা আমলকীর রস পান করুন ।জিঙ্ক যুক্ত খাবার খুবই জরুরিজিঙ্ক একটি অনন্য পুষ্টি উপাদান যা আপনার ইমিউন সিস্টেম এবং বিপাক কার্যে সহায়তা করে। কাঁচা, কুমড়োর বীজ, ছোলা, কাজু বাদাম, মাশরুম, মাংস, দই, দুধ, ডার্ক চকোলেট ইত্যাদিকে জিংক-এর পরিপূরক হিসেবে গ্রহণ করুন এবং ডায়েটে তালিকায় যোগ করুন।যদি আপনার হার্ট, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস, অ্যালার্জি সংক্রান্ত সমস্যা থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাদ্য তালিকা তৈরি করুন।