তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যর্থতার পিছনে মুসলিমদেরই বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। শনিবার এই ভাষাতেই ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে আক্রমণ শানালেন মিমের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। প্রশান্ত কিশোরের বিতর্কিত অডিও টেপের প্রসঙ্গ তুলে একের পর এক টুইট করেছেন ওয়েইসি।তাঁর অভিযোগ, সরকারি চাকরি থেকে শুরু করে শিক্ষা, মুসলিমরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। ওয়েইসি অভিযোগের সুরে জানান, কীভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাম্প্রদায়িকতাকে বাংলায় জায়গা করে দিয়েছেন, সেই কথা আলোচনা না করে মুসলিমদেরই মমতার ব্যর্থতার জন্য বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে পরিসংখ্যান তুলে ধরে মিম প্রধান জানান, বাংলায় মোট জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ মুসলিম। কিন্তু এই মুসলিমদের মধ্যে মাত্র ছ'শতাংশ সরকারি চাকরি করেন। একইসঙ্গে উচ্চশিক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশ মুসলিম। গ্রামে থাকা ৮০ শতাংশ মুসলিমদের রোজগার ৫,০০০ টাকার কম। তৃণমূলের পাশাপাশি বামেদেরও একইভাবে দায়ী করেছেন ওয়েইসি। তিনি অভিযোগ করেন, মমতার আগে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বামেদের হাতে বঞ্চনার শিকার হয়েছে বাংলার মুসলিমরা। তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি কেউই মুসলিমদের জন্য কিছুই করেনি। মমতাকে এখন বলতে হচ্ছে, মুসলিম ভোট ভাগ হতে দেবেন না। যদি সত্যিই উনি মুসলিমদের জন্য কাজ করে থাকেন, তাহলে উনি ভোট ভিক্ষা চাইছেন কেন? শনিবার তৃণমূল নেত্রীর ‘তোষামদের’ রাজনীতির চরম বিরোধিতা করে ওয়েইসি বলেন, ‘মমতা মুসলিমদের বলছেন, তিনি তাদের হিন্দুত্ব থেকে বাঁচাবেন। এদিকে তাঁর দলের ভোটকুশলী স্বীকার করে নিয়েছেন কীভাবে মমতা হিন্দুত্বকেই বেশি করে প্রাধান্য দিচ্ছেন।' এবারেই প্রথম এই রাজ্যে ভোটে লড়ছেন আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।রাজ্যের বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ভোটে লড়ছেন তিনি।ফলে তাঁর লক্ষ্য যে মুসলিম ভোটকে নিজের দিকে টানা হবেই তা বলার অপেক্ষা রাখে না।এখন দেখার সত্যিই আসাদউদ্দিন এই রাজ্যের মুসলিমদের মধ্যে নিজের প্রভাব বিস্তার করতে পারেন কিনা। উল্লেখ্য, শনিবার সকালে ভোট-পর্ব শুরুর ঠিক ১৮ মিনিট পরেই টুইটারে একাধিক অডিয়ো টেপ (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) প্রকাশ করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় আইটি সেলের প্রধান তথা রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবিয়া। প্রথম অডিয়ো টেপে (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) একজনকে বাংলার রাজনীতিতে সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। বিজেপির দাবি, ওই ব্যক্তি প্রশান্ত। ওই অডিয়ো টেপে (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) ওই ব্যক্তিতে বলতে শোনা যায়, ‘বড় সমস্যাটা হল, গত ২০ বছর ধরে সংখ্যালঘুদের ভয়ানক তোষণের জন্য সবকিছু করা হয়েছে। যা আপনাকে স্বীকার করতেই হবে। বাংলার দিকে দেখুন। এখানকার রাজনীতির একটা গুরুত্বপূর্ণ ধারণা হল, যে দলকে মুসলিমরা ভোট দেবেন, তারা সরকার গড়বে। কংগ্রেস হোক, বাম হোক বা দিদি হোন - মুসলিম ভোট পাওয়ার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। প্রথমবার হিন্দুরা ভাবছেন যে আমাদেরও কেউ জিজ্ঞাসা করছে। বিষয়টা এমন নয় যে পুরো সমাজই ভুল। কোথাও না কোথাও গিয়ে কয়েকটি বিষয়ের সদ্ব্যবহার করছে বিজেপি। আর সেই সুযোগটা কোনও না কোনওভাবে এসেছে সংখ্যালঘু রাজনীতির চূড়ান্ত অপব্যবহার থেকে।’