ওয়াকফ ইস্যুতে শীঘ্রই নেতাজি ইন্ডোরে একটি বৈঠক করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে অবশ্য রাজ্যের জেলায় জেলায় ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। কোথাও রাজ্যের মন্ত্রী রথীন ঘোষকে পড়তে হয়েছে বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে, আবার কোথাও সাংসদ শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান উঠছে ওয়াকফ প্রতিবাদ মিছিলে। এদিকে তৃণমূল সাংসদ খলিলুরের অফিসে পর্যন্ত হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই আবহে বিজেপির কটাক্ষ, তৃণমূল নিজেই নিজের পাতা ফাঁদে আটকে গিয়েছে। (আরও পড়ুন: ওয়াকফ প্রতিবাদের নামে তৃণমূল সাংসদের অফিস ভাঙচুর, খলিলুরকে ঘিরে ধরে গালিগালাজ!)
আরও পড়ুন: কলকাতায় বাস থেক গেরুয়া পতাকা খোলানোর অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন কমিশনার, বললেন…
আরও পড়ুন: আন্দোলন এবার দিল্লিতে, ব্রাত্যের সঙ্গে বৈঠকের পর চাকরিহারাদের বড় সিদ্ধান্ত
পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে মুর্শিদাবাদে রাজ্য প্রশাসন বিএসএফের কাছে সাহায্যের আবেদন করে। এর আগে বারংবার দেখা গিয়েছে, রাজ্যে রামনবমী বা অন্য কোনও হিংসার ঘটনা ঘটলে বিরোধী দল বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি তুলত। কিন্তু তার বিরোধিতা করে আসত তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এবারে জেলা প্রশাসন নিজে থেকেই বিএসএফের দ্বারস্থ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে। এদিকে সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে পুলিশের ভাবমূর্তি খুণ্ণ হয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই 'ট্রোল' করছে পুলিশকে। বিজেপি নেতারা বলছেন, কসবায় শিক্ষকদের পুলিশ লাথি মারে, কিন্তু ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের মিছিল হিংসাত্মক আকার নিলে পুলিশ ভয়ে নিজের প্রাণ বাঁচাতে পালাচ্ছে। (আরও পড়ুন: স্টেশন-জাতীয় সড়কে ছড়িয়ে তাণ্ডবের চিহ্ন, এখন কেমন আছে মুর্শিদাবাদ? দেখুন ভিডিয়ো)
আরও পড়ুন: 'ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির বেদিতে শাসনব্যবস্থার বলি', WAQF ইস্যুতে হামলা BDO অফিসে
এই সবের মাঝেই গত ১০ এপ্রিল মধ্যমগ্রামে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে পথ অবরোধ করেছিলেন সংখ্যালঘুরা। সেই সময় স্থানীয় কাউন্সিলরকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন মন্ত্রী রথীন ঘোষ। সেখানে রথীনকে ঘিরেই বিক্ষোভ শুরু করে প্রতিবাদীরা। পরে অবশ্য পুলিশ বুঝিয়ে প্রতিবাদীদের ওঠায়। এদিকে 'অপ্রস্তুত' রথীন দাবি করেন, তরুণ বয়সের প্রতিবাদী, তাই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এদিকে বীরভূমের মুরারইয়ে ওয়াকফ (সংশোধিত) আইনের বিরোধিতার মিছিলে গতকাল দেখা যায়, শতাব্দীর ছবিতে কালি লেপে কাটাকুটি করেছে প্রতিবাদীরা। যদিও মুখ রক্ষা করতে তৃণমূল দাবি করছে, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে এরই মাঝে জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমানের অফিসে হামলা হয় গতকাল। সেখানে খলিলুরকে ঘিরে ধরে ওয়াকফ প্রতিবাদীরা। পরে পুলিশ তাঁকে রক্ষা করে। এদিকে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী আবার ওয়াকফ প্রতিবাদে সামিল হয়ে বক্তব্য রাখছেন, সেটাকে 'উস্কানিমূলক' আখ্যা দিচ্ছে বিজেপি। এই আবহে সিদ্দিকুল্লাও তৃণমূলের জন্যে অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠতে পারেন। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী নিজে দাবি করেছেন, রাজ্যে নাকি তাঁর সরকার সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকর করতে দেবেন না। তবে সিএএ-র পরে কি মমতার সেই আশ্বাসে মন গলছে না সংখ্যালঘুদের?