ট্রেনে ভুয়ো টিকিট পরীক্ষকদের দৌরাত্ম্য রুখতে আগেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পূর্ব রেলের শিয়ালদা ডিভিশন। যাত্রী নিরাপত্তা ও পরিষেবা স্বচ্ছ করতে সম্প্রতি টিকিট পরীক্ষকদের জন্য চালু হয়েছে ‘বিশেষ ব্যাজ ব্যবস্থা’। এই ব্যবস্থার সাফল্য মিলছে হাতেনাতে। বিশেষ ব্যাজ ব্যবস্থার জেরে ধরা পড়ল দু’জন ভুয়ো টিকিট পরীক্ষক।
আরও পড়ুন: মুম্বই মেলে ঘুরছিল ভুয়ো টিকিট পরীক্ষক, আই কার্ড দেখিয়ে চোটপাট, ‘আমিই চেকার’
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিয়ালদা - লালগোলা প্যাসেঞ্জার এবং লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশন থেকে দুই ভুয়ো টিকিট পরীক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথম ঘটনাটি ঘটে শিয়ালদা–লালগোলা প্যাসেঞ্জারে ট্রেন নম্বর ৫৩১৭৫-তে। এক ব্যক্তি নিজেকে টিকিট পরীক্ষক পরিচয় দিয়ে যাত্রীদের থেকে প্রতারণা করছিলেন বলে অভিযোগ। তখন যাত্রীদের কয়েকজন তাঁর কাছে ব্যাজ দেখতে চান। কিন্তু, তিনি ব্যাজ দেখাতে না পেরে সন্দেহজনক আচরণ শুরু করেন এবং নিজেকে ভিজিল্যান্স অফিসার বলে দাবি করেন। তখন যাত্রীদের বুঝতে দেরি হয়নি। তাঁরা ওই ব্যক্তিকে ধরে ফেলেন এরপর কৃষ্ণনগর সিটি জংশনে আরপিএফের হাতে তুলে দেন। ধৃতের নাম সঞ্জয় ঘোষাল। জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, তিনি টিটিই বা ভিজিল্যান্স অফিসার নন।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশনে। ট্রেনে দায়িত্বে থাকা টিকিট পরীক্ষকরাই দেখতে পান তাঁকে। তাঁদের নজরে আসে যে এক ব্যক্তি যাত্রীদের টিকিট দেখতে চাইছেন এবং নিজেকে টিকিট পরীক্ষক বলে দাবি করছেন। সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে ব্যাজ দেখাতে বলেন টিকিট পরীক্ষকরা। কিন্তু, ব্যাজ না থাকায় তিনি অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে ধরে আরপিএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
শিয়ালদা ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার রাজীব সাক্সেনা এ বিষয়ে বলেন,‘নতুন ব্যাজ ব্যবস্থার ফলে সত্যিকারের টিটিইদের শনাক্ত করা যেমন সহজ হয়েছে, তেমনই সাধারণ যাত্রীদের পক্ষে ভুয়োদের ধরাও এখন অনেক বেশি সহজ হয়েছে। নিরাপত্তার উদ্যোগ সফল হয়েছে।’ রেল সূত্রে জানা যায়, এই বিশেষ ব্যাজ ব্যবস্থা পদক্ষেপের মূল উদ্যোক্তা হলেন শিয়ালদা ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার জসরাম মীনা। তাঁর পরিকল্পনা এবং উদ্যোগের ফলেই এই বিশেষ ব্যাজ ব্যবস্থা চালু হয়। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এই ধরনের প্রতারণা রুখতে ভবিষ্যতেও এই ব্যাজ ব্যবস্থাকে আরও বিস্তৃত ও কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে।