স্বাধীনতা দিবসের উৎসবকে সামনে রেখে দেদার বিধিভঙ্গ করা হয়েছে। মোটরবাইক বা গাড়িতে বড় জাতীয় পতাকা লাগিয়ে গতির তুফান তোলা হয়েছে। আবার পতাকা লাগিয়ে মোটরবাইকের পিছনে একসঙ্গে তিনজনকে বসিয়েও তীব্র গতিতে চলে তারা। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো দেখা গিয়েছে। পুলিশের সামনেই তীব্র গতিতে চলেছে মোটরবাইক।
Ad
কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ।
শহরে উৎসবের আবহ তৈরি হলেই বিধিভঙ্গের নালিশ শোনা যায়। এটাই এখন শহর কলকাতার ট্রেন্ড। সুতরাং রাস্তায় যতই পুলিশ বাড়ানো হোক, ফোর্স দেওয়া হোক এই প্রবণতায় লাগাম টানা মুশকিল। মানুষ যদি সচেতন না হন এবং প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা না করেন তাহলে এই বেপরোয়া উৎসব পালন রোখা সম্ভব নয়। স্বাধীনতা দিবসের দিন মোটরবাইকের পিছনে একাধিক জনকে বসিয়ে দেদার দাপট দেখালেন অনেকে। তার সঙ্গে শুরু হল শব্দের তাণ্ডব। উৎসবের নামে বাড়ল বিধি ভাঙার প্রবণতা।
পুলিশ ঠিক তথ্য পেয়েছে? লালবাজার সূত্রে খবর, এই বছর (২০২৩) স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে অতিরিক্ত চার হাজার পুলিশকর্মী রাস্তায় নামানো হয়েছিল। বাড়তি ফোর্স দেওয়া হয়েছিল এবার। একশোরও বেশি জায়গায় নাকা তল্লাশির ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। শপিং মল থেকে শুরু করে দ্রষ্টব্য স্থানে পুলিশের কড়া পাহারা ছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের প্রত্যেক মোড়ে ফোর্স মোতায়েন করা ছিল। নিশ্ছিদ্র পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। বিধি ভাঙা আটকাতে এই বছর দ্বিগুণ সংখ্যায় পুলিশ নামানো হয়েছিল। তারপরও বিধিভঙ্গের ছবির কোনও বদল ঘটেনি।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? স্বাধীনতা দিবসের উৎসবকে সামনে রেখে দেদার বিধিভঙ্গ করা হয়েছে। মোটরবাইক বা গাড়িতে বড় জাতীয় পতাকা লাগিয়ে গতির তুফান তোলা হয়েছে। আবার পতাকা লাগিয়ে মোটরবাইকের পিছনে একসঙ্গে তিনজনকে বসিয়েও তীব্র গতিতে চলে তারা। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো দেখা গিয়েছে। পুলিশের সামনেই তীব্র গতিতে চলেছে মোটরবাইক। বড় বড় সাউন্ড বক্স বাজিয়ে পিকনিকে মাতেন অনেকে। আর এদেরকে ধরলে পুলিশকে পাল্টা প্রশ্ন করা হচ্ছে, ‘আজও কি আমরা স্বাধীন নই? একটু স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারব না। তাহলে কি ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়?’ এসব পর্যন্ত শুনতে হয়েছে পুলিশকে।
আর কী জানা যাচ্ছে? পুলিশ বারবার সতর্ক করলেও বিধিভঙ্গ রোখা যায়নি। গায়ে জাতীয় পতাকা মেলে ধরে পাল্টা যুবক–যুবকীরা বলেছেন, ‘হিম্মত থাকলে করুন গুলি।’ বিধি ভাঙা নিয়ে লালবাজারের এক অফিসার বলেন, ‘একাধিক জায়গাতেই নিয়ম ভাঙা হয়েছে। বিধিভঙ্গের ব্যবস্থা নিতে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ বললে বা সতর্ক করলে মানুষজন শুনছেন না।’ স্বাধীনতা দিবসের উৎসবে শহরে ভিড় উপচে পড়েছিল। বিভিন্ন ক্লাব, স্কুল থেকে সংগঠন— সর্বত্রই স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে। শপিং মল, রেস্তরাঁয় ভিড় ছিল ভালই। জাতীয় পতাকার রং মিলিয়ে পোশাক পরতে দেখা গিয়েছে আট থেকে আশি সবাইকে।