‘ভবানীপুরেও ওঁকে হারাব’। এটাই ছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য। এই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু মুখে বলেননি। বরং একটা ধাক্কা দিয়ে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। সেটি হল, হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডলকে তৃণমূল কংগ্রেসে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে দেন। আর সেটি হতেই বেশ চাপে পড়ে যান পূর্ব মেদিনীপুরের নেতা। নন্দীগ্রাম থেকে ভবানীপুরে এসে শুভেন্দু অধিকারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এমনটাই ভেবেছিলেন বিজেপির বেশ কয়েকজন নেতা। এবার হঠাৎ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন হাওয়া মোরগের মতো। তিনি যে ভবানীপুর কেন্দ্রে দাঁড়াবেন না এবার সেটা স্পষ্ট করলেন।
এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে জানাতেই রাজ্য–রাজনীতিতে ঝড় বইতে শুরু করেছে। কারণ আজ মঙ্গলবার নিজের ছোঁড়া চ্যালেঞ্জ এবং অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ালেন বিরোধী দলনেতা। আজ বিজেপি প্রার্থী দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে হারাবেন বলে অবস্থান বদল করলেন শুভেন্দু অধিকারী। সুতরাং ভবানীপুর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারীর লড়াই হচ্ছে না। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভবানীপুরে হারানো ২০২৬ সালে হচ্ছে না এটা কার্যত দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গেল। নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী একুশের নির্বাচনে দাঁড়াবেন বলেছিলেন দাঁড়িয়েছিলেন। সামান্য ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। প্রথমে তিনিই জয়ী সেটাই ঘোষণা করা হয়। পরে লোডশেডিং এবং পুনরায় গণনা করে জানানো হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরাজিত। যার জন্য এই কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মন্দারমণিতে স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগ, আত্মঘাতী হলেন স্বামী, তদন্তে কোস্টাল থানা
সেখানে বিরোধী দলনেতা আগেই মাঠ ছেড়ে দিলেন। নিজে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েও সরে গেলেন। বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে। ইতিমধ্যে তার দামামা বেজে গিয়েছে। এই আবহে আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার কাছে হেরেছে ১ হাজার ৯৫৬ ভোটে। আবার ভবানীপুরেও ২০২৬ সালে বিজেপির প্রার্থীকে দাঁড় করিয়ে ওনাকে হারাব। উনি কম্পার্টমেন্টাল চিফ মিনিস্টার হিসাবে রয়েছেন। এরপরে ডবল কমার্টমেন্টাল নেত্রী হিসাবে পরিচিত পাবে বাংলায় এক্স চিফ মিনিস্টার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ কদিন আগে শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘ভবানীপুরেও ওঁকে হারাব। আরও পাঁচ বছর হারের জ্বালা বয়ে বেড়াতে হবে।’ তখন সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, ‘শুভেন্দুবাবু যদি ভবানীপুরে দাঁড়ানোর জন্য দলের কাছে প্রস্তাব দেন আমরা সেই প্রস্তাবকে সাদরে গ্রহণ করব।’
তবে মুখে বলা আর কাজে করে দেখানোর মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। এবার সেটাই বুঝতে পেরেছেন শুভেন্দু বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বিরোধী দলনেতার অবস্থান বদল নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। কুণালের বক্তব্য, ‘আমরা জানি ভবানীপুর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থবারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত বিধায়ক করে বিধানসভায় পাঠাতে চলেছে ২০২৬ সালে। এবার কেউ ভবানীপুর নামটা দেখে যদি প্রচার পাওয়ার জন্য বলে ওখানে দাঁড়াব, হ্যান ক্যারেঙ্গে, ত্যান ক্যারেঙ্গে, দিনের শেষ কুছ নাহি ক্যারেঙ্গে। শেষে ওই হাল হয়েছে। আমরা প্রথম থেকে বলেছি ভবানীপুর নিয়ে কথা বলবেন না। ওখানে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে, চোখ ঝলসে যাবে। করবেন না এসব। শোনেননি। এখন তো শোনা যাচ্ছে ব্যাকআউট।’