এক বধূর মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এক ব্যাঙ্ককর্মীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠল। ঘটনা ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে মুর্শিদাবাদের সালার থানার পূর্ব শেখপাড়া এলাকায়। মৃতার আত্মীয়দের দাবি, অবিলম্বে ওই ব্যাঙ্ককর্মীর বিরুদ্ধে আইনত কঠোর পদক্ষেপ করা হোক। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, মৃত বধূর নাম বিউটি বিবি। ২২ বছরের বিউটির স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক। তিনি বর্তমানে কেরলে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এই দম্পতির দুই নাবালক সন্তানও রয়েছে।ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, আর্থিক প্রয়োজনে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কাছে বসত বাড়িটি বন্ধক দিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন বিউটি। নিয়ম অনুসারে, প্রতি মাসে সেই ঋণের কিস্তি মেটানোর কথা।পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিউটি ভেবেছিলেন, তাঁর স্বামী ভিনরাজ্য থেকে সংসার খরচ বাবদ যা পাঠান, সেই টাকা বাঁচিয়েই ঋণের কিস্তি শোধ করবেন তিনি। কিন্তু, আর্থিক অনটনের কারণে সেই পরিকল্পনা কাজে আসেনি। ফলত, মাসের পর মাস ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি মেটাতে পারছিলেন না তিনি।স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য অনুসারে, ঋণের কিস্তির টাকা চেয়ে একাধিকবার ব্যাঙ্কের তরফে প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা মাঝেমধ্যেই আসতেন টাকার জন্য তাগাদা করতে। কিন্তু, বিউটির কাছে দেওয়ার মতো টাকা ছিল না।শেষমেশ শুক্রবারও (২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) একইভাবে এক ব্যাঙ্ককর্মী বিউটির কাছে আসেন টাকা চাইতে। বিউটি জানান, তাঁর কাছে টাকা নেই। অভিযোগ, এরপরই নাকি ওই ব্যাঙ্ককর্মী বিউটিকে বলেন, ব্যাঙ্কের ঋণের কিস্তি মেটানোর ক্ষমতা না থাকতে তাঁর বিষ খেয়েই মরা উচিত!স্থানীয়দের দাবি, এই ঘটনা ঘটে প্রকাশ্যে - সকলের সামনে। পাড়া-প্রতিবেশীদের সামনেই বিউটিকে চরম অপমান করেন ওই ব্যাঙ্ককর্মী, তাঁকে বিষ খেয়ে মরতে বলেন।বিউটির এক আত্মীয়া সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, এভাবে সকলের সামনে অপমানিত হয়ে গুম হয়ে গিয়েছিলেন ২২ বছরের ওই বধূ। এবং তারপরই নাকি তিনি ঘরের ভিতর ঢুকে চাষের কাজে ব্যবহৃত কীটনাশক খেয়ে নেন।এই ঘটনা জানাজানি হতেই বিউটিকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, সময় যত গড়ায়, তাঁর স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হতে শুরু করে। যার জেরে তাঁকে কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। শুক্রবার রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় বিউটির।এই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যাঙ্ককর্মীর কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।