গুজরাটের বাসিন্দা, বয়স ২৪ এর নীল শুক্লা, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, একদিন পুরনো অ্যালবাম দেখছিলেন। অ্যালবামটি ছিল তাঁর শৈশবের ছবিতে ভরা। ছবি দেখে নস্ট্যালজিক হয়ে পড়েন, স্মৃতি তাজা হয়ে যায়। স্মৃতিগুলোকে ফোন বন্দি করে নিতে কিছু ছবি স্ক্যান করে গুগল ড্রাইভে আপলোড করে দিয়েছিলেন নীল, যাতে এই ছবিগুলো সবসময় তাঁর কাছে থাকে। এদিক আপলোড করার পরই হঠাৎ করেই নীলের অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছিল গুগল।
শিশু পর্নোগ্রাফির অভিযোগে তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমন অদ্ভুত কাণ্ড দেখে তিনি কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। পরে ছবিগুলো ভালো করে দেখে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে তাঁর ড্রাইভে আপলোড করা ছবিগুলোর মধ্যে একটি ছিল, যেখানে তাঁর ঠাকুমা তাঁকে স্নান করাচ্ছিলেন। আর সম্ভবত এটি দেখেই গুগলের পর্নোগ্রাফি বলে মনে হয়েছে।
অনেক চেষ্টা করেও নীলের অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করা যায়নি। যার দরুণ তিনি অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করানোর জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। প্রকৌশলী নীল শুক্লা জানিয়েছেন, বয়স তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র দুই বছরের, যখন তাঁর দাদি তাঁকে স্নান করিয়েছিলেন। এই দৃশ্যটিকে কীভাবে পর্নোগ্রাফি বলতে পারে গুগল। সবটা শুনে তাই এবার গুগলকে নোটিশ পাঠিয়েছে হাইকোর্ট। গুজরাট হাইকোর্ট রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার এবং গুগল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডকে নোটিশ জারি করেছে বলে জানা গিয়েছে।
- এআই এর হাত থাকতে পারে
নীল জানিয়েছেন যে তিনি গুগল ড্রাইভে তাঁর ছবি আপলোড করার পর গত বছরের এপ্রিলে অ্যাকাউন্টটি ব্লক করা হয়েছিল। আর গুগলের এআই-ভিত্তিক কাজকর্ম সাম্প্রতিক সময়ে বিতর্কিত ফলাফলও দিয়েছে। তাই নীল শুক্লা বলেছেন, তিনি সন্দেহ করছেন যে তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্লক করার পিছনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হাত (AI) থাকতে পারে।
- কাজে প্রভাব পড়েছে
নীল শুক্লার আইনজীবী দীপেন দেশাই হাইকোর্টে বলেছেন যে তাঁর ক্লায়েন্ট এই ব্লক হওয়ার দরুণ এমনকি ইমেলও অ্যাক্সেস করতে পারছেন না। যার কুপ্রভাব পড়ছে ব্যবসায়। তিনি যেহেতু পেশায় একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, তাঁর বেশিরভাগ ব্যবসাই ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগের উপর নির্ভর করে। এই ব্লকটি শুক্লার জন্য অনেকটা পরিচয় হারানোর সমান। সেই কারণেই শুক্লা তাঁর অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য গুগলকে অনুরোধও করেছিলেন, গুগল কথা শোনেনি। এমনকি এই পুরনো ইমেল কাজ না করায়, নতুন ইমেল অ্যাকাউন্ট খুললে সেটিকেও ব্লক করে দিয়েছিল গুগল। কিন্তু শেষমেশ কোনও উপায় না দেখে শুক্লা গুজরাট পুলিশ এবং কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, তাও কোনও লাভ হয়নি। এর দরুণই হাইকোর্টে আবেদন করতে বাধ্য হয়েছিলেন শুক্লা।