মৃত্যুতেও শান্তি নেই, বকেয়া বিলের জেরে প্রয়াত পাকিস্তানের সোনাজয়ী অলিম্পিয়ানের দেহ আটকে রাখার অভিযোগ

যাঁর হাত ধরে বিশ্বের দরবারে গর্বিত হয়েছিল পাকিস্তান, যিনি পাক হকিকে সাফল্যের শিখর নিয়ে গিয়েছিলেন, যিনি অলিম্পিক্সে পাকিস্তানের সোনাজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন, সেই কিংবদন্তিকে মৃত্যুর পরেও অসন্মানিত হতে হল। বিল বকেয়া থাকায় পাকিস্তানের প্রাক্তন অলিম্পিয়ান মনজুর হুসেনের দেহ দীর্ঘ ক্ষণ আটকে রাখার অভিযোগ উঠল লাহোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।পাকিস্তানের একটি বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসার বকেয়া পরিশোধ না করার কারণে, সোমবার কয়েক ঘণ্টা ধরে মনজুর হোসেনের দেহ আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁর পরিবারের লোকজনকে হস্তান্তর করতে চায়নি অভিযুক্ত বেসরকারি হাসপাতাল। পরে জানতে পেরে পাকিস্তান হকি ফেডারেশন সেই বিল মেটালে, মনজুরের পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে।আরও পড়ুন: পদক জিততেই নাচে গানে মেতে উঠল ভারতের মহিলা হকি দলের সাজঘর, মনপ্রীতদের কুর্নিশহৃদ্যন্ত্রে সমস্যা নিয়ে সোমবার ভোরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল মনজুরকে। সেখানে তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হয়। কয়েক ঘণ্টা পরে মৃত্যু হয় তাঁর। বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। চিকিৎসকরা মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়ার পরেও দেহ ছাড়তে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, চিকিৎসার পুরো খরচ মেটানো হয়নি। মনজুরের পরিবার বিষয়টি জানায় হকি সংস্থাকে। জানতে পেরে পদক্ষেপ করে তারা।সংস্থার এক আধিকারিক বলেছেন, ‘চিকিৎসার বকেয়া পরিশোধ না করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রাক্তন হকি খেলােয়াড়ের দেহ কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখেছিল। পরে পাকিস্তান হকি ফেডারেশন (পিএফএইচ) বিষয়টি সামলে নেয়। পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তার পরেই তাঁর দেহ স্বজনদের হস্তান্তর করা হয়।’হকি সংস্থার অভিযোগ, মনজুরের মতো এক জন বিখ্যাত ক্রীড়াবিদের পরিবারকে যে হেনস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। এতে ক্রীড়াজগতকে অপমান করা হয়েছে।অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের মরদেহ নিয়ে এমন লজ্জাজনক ঘটনা পাকিস্তানে আগে ঘটেনি বলে দাবি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন।পাকিস্তানের হকি দলের হয়ে ১৯৭৬ ও ১৯৮৪ সালের অলিম্পিক্স খেলেছিলেন মনজুর। প্রথম বার ব্রোঞ্জ ও পরের পার সোনা জিতেছিল পাকিস্তান। ১৯৭৮ ও ১৯৮২ সালে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ী হকি দলেরও সদস্য ছিলেন তিনি।