প্রয়াগরাজে এবারের মহাকুম্ভের আয়োজনে একের পর এক অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটলেও এ নিয়ে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বিরোধীদের আক্রমণের পথেই হাঁটলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিরোধী তথা সমালোচকদের সম্বোধন করলেন 'শকুন' বলে!
যোগীর বক্তব্য হল, যে মহাকুম্ভে এসে পুণ্যার্থী পুণ্য, দরিদ্র কর্মসংস্থান, ধনী নতুন ব্যবসার সুযোগ এবং পর্যটকরা আতিথেয়তা খুঁজে পেয়েছেন, সেখানে শকুনের দল শুধুই মড়া খুঁজে পাবে!
যোগীর সোজাসাপটা অভিযোগ হল, যাঁরাই মহাকুম্ভের অব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা করেছেন, তাঁরা হয় পক্ষুপাতদুষ্ট, আর না হয় - সমাজতন্ত্রী কিংবা বামপন্থী। তাই তাঁরা মহাকুম্ভের সৌন্দর্য খুঁজে পান না। সেইসঙ্গেই তিনি উল্লেখ করেন - হজ যাত্রার সময়েও অব্যবস্থার কারণে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে অতীতে।
বিধানসভার চলতি অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে গিয়ে এই সমস্ত কথা বলেন যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর দাবি, 'ওঁরা (বিরোধী বা সমালোচকরা) মহাকুম্ভের মহিমা ক্ষুণ্ণ করতে চাইছেন এবং ওঁদের সেই উদ্দেশ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে। ওঁদের মন্তব্যগুলি শুধুমাত্র মহাকুম্ভের উপর আক্রমণ নয়, তা আদতে ভারতের সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের প্রতি হামলার সমতুল্য।'
যোগীর আরও অভিযোগ, গত প্রায় দেড়মাস ধরে বামপন্থী এবং সমাজতন্ত্রীরা মহাকুম্ভ নিয়ে নেতিবাচক বার্তা ছড়াতেই ব্যস্ত থেকেছেন! তাঁরা নাকি যে নোংরা, অব্যবস্থা আর সমস্যার কথা বলছে, সবই আসলে তাঁদের কল্পনাপ্রসূত! যদিও তাঁদের এই অপ্রচার বাস্তবে কোনও প্রভাব ফেলতে পারেনি বলেও দাবি করেছেন যোগী আদিত্যনাথ।
তিনি দাবি করেছেন, সাড়ে ছ'কোটিরও বেশি সনাতনি তাঁদের বিশ্বাস ও আস্থায় ভর করে গঙ্গা ও যমুনার সঙ্গমে পুণ্যস্নান সেরেছেন। রাজ্যের বিজেপি সরকার আধ্যাত্মিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক মাইলফলক স্থাপন করেছে বলেও দাবি করেন যোগী।
তিনি বলেন, '৫ বছর সাফল্যের সঙ্গে সরকার পরিচালনা করার পর ২০২২ সালে বিজেপি ফের বিপুল সংখ্যাগিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় ফেরে। ২০২৭ সালের নির্বাচনেও আমরা জয়ের এই ধারা অব্যাহত রাখব।'
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, নির্দিষ্ট একটি ধর্মের লোকেদের নাকি মহাকুম্ভে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগ একবাক্যে খারিজ করে দিয়েছেন যোগী। তাঁর দাবি, সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের জন্যই মহাকুম্ভের দরজা খোলা ছিল। যাঁরা সম্মানের সঙ্গে ও সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে মহাকুম্ভে আসতে চেয়েছেন, তাঁদের সকলকেই স্বাগত জানানো হয়েছে।