রিপোর্ট অনুযায়ী, পূর্ব রেলের কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে জানান, কর্মীদের মধ্যে একটি গণভোটের আয়োজন করা হয়। ভোটের ফল, পুরনো পেনশন স্কিম চালুর দাবি জানিয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে ধর্মঘটের পথে হাঁটা উচিত। এই আবহে দেশের রেলযাত্রীরা চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারেন।
রেল ধর্মঘটের সম্ভাবনা
পুরনো পেনশন স্কিমের দাবিতে এবার ধর্মঘটের পথে হাঁটতে পারেন রেলকর্মীরা। এমনই ইঙ্গিত মিলছে রিপোর্টে। সম্প্রতি পুরনো পেনশন স্কিমের দাবিতে আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণ করতে কর্মচারী ইউনিয়নের তরফ থেকে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল দেশজুড়ে। সেখানে নাকি অধিকাংশ কর্মী ধর্মঘটের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, পূর্ব রেলের কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে জানান, কর্মীদের মধ্যে একটি গণভোটের আয়োজন করা হয়। ভোটের ফল, পুরনো পেনশন স্কিম চালুর দাবি জানিয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে ধর্মঘটের পথে হাঁটা উচিত। এই আবহে বাংলা সহ গোটা দেশের রেলযাত্রীরা চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারেন। (আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যেও 'বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল'? অন্ধ হচ্ছে বিমান! নির্দেশিকা জারি DGCA-র)
জানা গিয়েছে, গোপন ব্যালটের মাধ্যমে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। গত ২১ এবং ২২ নভেম্বর হয়েছিল এই ভোটগ্রহণ। এরপর এই গোপন ব্যালট পাঠানো হয় অল ইন্ডিয়া রেলওয়েমেনস ফেডারেশনে। সেখানে গণনা হয় এই ভোটের। জানা গিয়েছে, পূর্ব রেলের কর্মচারীদের মধ্যে ৯২ শতাংশই ধর্মঘটের পক্ষে ভোট দেন। শুধু পূর্ব রেল নয়, দেশজুড়ে ৯০ শতাংশ রেলকর্মীই নাকি ধর্মঘটের পক্ষে মত দিয়েছেন গোপন ব্যালটে। (আরও পড়ুন: 'অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা...', ভারতে তৈরি তেজস যুদ্ধবিমানে চেপে আকাশে উড়লেন মোদী)
প্রসঙ্গত, বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে জাতীয় পেনশন স্কিম এবং পুরোনো পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে রাজনীতি চলছে দেশে। বহু ক্ষেত্রেই সরকারি কর্মীরা পুরনো ব্যবস্থা চালু করার দাবি করেছে। এই আবহে দিল্লিতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সমাবেশ হয়েছে। এমনকী আরএসএস-এর অনুমোদন প্রাপ্ত সংগঠনও ওপিএস ফেরানোর দাবিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছে। সরকারি কর্মীদের বক্তব্য, এনপিএস-এর অধীনে অবসর গ্রহণের পরে তাদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত তারা। কেন এনপিএস বনাম ওপিএস দ্বন্দ্ব? কত টাকা জমানো হয়েছে, কত বছরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, কী ধরনের বিনিয়োগ করা হয়েছে, বিনিয়োগ থেকে কত আয় হয়েছে - এই সমস্ত বিষয়গুলির উপর নয়া পেনশন প্রকল্প নির্ভর করে। সেখানে পুরনো ব্যবস্থায় শেষ পাওয়া বেতনের ৫০ শতাংশ পেনশন পাওয়া যায়। যা নির্ধারিত ছিল। সেইসঙ্গে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও মিলত এতে। এদিকে প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, শেষ যে বেতন তুলেছিলেন সরকারি কর্মচারী, সেটার ৩৫ শতাংশের মতো পেনশন বাবদ পাওয়া যায়। তবে সেটা যে মিলবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। কারণ পুরোটাই বাজারের উপর নির্ভর করে।
এদিকে কয়েক সপ্তাহ আগেই অষ্টম বেতন কমিশনের দাবিতে রেলকর্মীদের তরফ থেকে চিঠি লেখা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। রেল কর্মীদের সংগঠন - ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান রেলওয়েমেনের তরফে এই চিঠি লেখা হয়। রেল কর্মীদের দাবি, এইক্রয়ড সূত্রে বেতন কমাঠামো পর্যালোচনা করা হোক। তাতে মূল্যবৃদ্ধি অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি নতুন কমিশনের অপেক্ষা না করে এই ফর্মুলাতেই ম্যাট্রিক্স বদল করা যেতে পারে বলেও সুপারিশ রেলকর্মীদের সংগঠনের। উল্লেখ্য, গত ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দেশে কার্যকর হয়েছিল সপ্তম বেতন কমিশন। সেই অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারি কর্মীদের ন্যূনতম মাসিক বেতন ১৮ হাজার টাকা।
এই আবহে রেলকর্মীদের বক্তব্য ছিল, 'সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর হয়েছে, প্রায় আট বছর হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও কেন্দ্রীয় সরকার অষ্টম বেতন কমিশনের বিষয়ে কোনও কিছু ভাবেনি। সপ্তম বেতন কমিশনের তরফে সুপারিশ করা হয়েছিল, ১০ বছরের জন্য অপেক্ষা না করে তার আগেই বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করা যাবে।' সরকার যাতে সেই মতো কাজ করে, তার আবেদনই জানানো হয়। এর আগে দুর্গাপুজোর মধ্যেই রেলকর্মীদের চার শতাংশ ডিএ বাড়ানো হয়। ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়েছে নয়া ডিএ। বর্তমানে তাদের ডিএ বেড়ে ৪৬ শতাংশ হয়েছে। এর আগে ৪২ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছিলেন তারা। এদিকে জুলাই থেকে শুরু করে তিন মাসের এরিয়ারের টাকা অক্টোবরে ঢুকেছে রেলকর্মীদের অ্যাকাউন্টে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সরকার যে ডিএ দেয়নি, সেটা মিটিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন রেলকর্মীরা।