আবারও রক্তাক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বন্দুকবাজ ছাত্রের হামলায় মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ২ জনের। আহত আরও ৫। ঘটনার পরপরই ক্যাম্পাসে জারি হয় লকডাউন এবং জরুরি সতর্ক ঘটনার পরে পরেই পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে আটক হয়েছে বন্দুকবাজ।এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। (আরও পড়ুন: ২৬/১১ মুম্বই হামলার চক্রী তাহাউরকে নিয়ে পাকিস্তানকে 'রিমাইন্ডার' দিল ভারত)
আরও পড়ুন-জাপানি মহিলাকে বীর্য পাঠালেন মাস্ক! সন্তানদের ফৌজ গড়তে তৎপরতা
সূত্রে খবর, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুরে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র ইউনিয়নের কাছে ২০ বছরের এক পড়ুয়া এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। যার জেরে ক্যাম্পাসজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। ছাত্রছাত্রীরা দৌড়ে পালাতে থাকেন, এদিক ওদিক লুকিয়ে পড়ে আশ্রয় নেন। এলোপাথাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২ জনের। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফ্লোরিডা পুলিশ। গুলি করা হয় হামলাকারী পড়ুয়াকে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছে, নিহতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন। (আরও পড়ুন: দরগাহ ভাঙার নোটিশে দ্রুত শুনানি হল না কেন? হাইকোর্টকে কড়া প্রশ্ন শীর্ষ আদালতের)
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ হিংসা নিয়ে ভারতকে 'জ্ঞান' দিতে এসে সপাটে 'চড়' খেল বাংলাদেশ!
পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকবাজের নাম ফিনিক্স ইকনার। বয়স ২০। তিনি নিজেই ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র এবং লিওন কাউন্টি শেরিফের দফতরের একজন ডেপুটি শেরিফের ছেলে।ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির পুলিশ জানিয়েছে, ইকনার তাঁর মায়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেই এই হামলা চালিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও তাঁর কাছে একটি শটগান পাওয়া গেছে, যদিও তা তিনি ব্যবহার করেছিলেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।তবে কিছু প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, প্রথমে ইকনার একটি রাইফেল ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেন, তারপর সেটি ফেলে পিস্তল দিয়ে গুলি চালাতে থাকেন।ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের রাজধানী তালাহাসি লিওন কাউন্টির শেরিফ ওয়াল্টার ম্যাকনিল বলেন, অভিযুক্ত বন্দুকধারী ২০ বছর বয়সী এক তরুণ। বন্দুকধারী আমাদের বাহিনীর এক কর্মকর্তার ছেলে। ঘটনাস্থল থেকে যে সব বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে একটি ওই অফিসারের।
এক ছাত্র ড্যানিয়েলা স্ট্রিটি, এবিসি নিউজকে বলেন, তিনি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের বিপরীত দিকের ভবনে ছিলেন যখন সাইরেন বেজে ওঠে। তিনি দেখেন, বাইরে থাকা লোকজন তাঁর ভবনে দৌড়ে প্রবেশ করে এবং স্টুডেন্ট ইউনিয়ন থেকে ছাত্ররা পালিয়ে আসে। তিনি আরও বলেন, পুলিশের নীল আলো এবং ছাত্রদের দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছিল।আর এক ছাত্র রায়ান সিডারগ্রেন নামের এক কমিউনিকেশনস স্টুডেন্টের কথায়, 'আমরা ৩০ জন একসঙ্গে স্টুডেন্ট ইউনিয়নের নীচতলায় আশ্রয় নিই। দেখলাম ছুটে পালাচ্ছে অনেকে। তখন শুধু বাঁচার কথা মাথায় ছিল।' এদিকে, ঘটনার পরপরই ৪৪ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রীর এই ক্যাম্পাসে জরুরি লকডাউন জারি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে, 'দয়া করে সব দরজা-জানালা বন্ধ করুন এবং নিরাপদ আশ্রয়ে থাকুন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে।' একাধিক বার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়, যাতে কেউ ক্যাম্পাসে না আসেন এবং সবাই ঘরের মধ্যে থাকেন।
আরও পড়ুন-জাপানি মহিলাকে বীর্য পাঠালেন মাস্ক! সন্তানদের ফৌজ গড়তে তৎপরতা
অন্যদিকে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠকের আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ে গুলি চলার হওয়ার ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি দ্বিতীয় সংশোধনীর একজন বড় সমর্থক। যা হচ্ছে শুরু থেকেই ঘটছে। আমি এটি রক্ষা করেছি। এই রকম ঘটনা বা জিনিস ভয়াবহ। কিন্তু বন্দুক গুলি করে না, মানুষ করে।' তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে এ ধরনের গুলি চালানোর ঘটনা নতুন নয়।পরপর ঘটে যাওয়া এই ঘটনাগুলি বন্দুক আইন এবং ক্যাম্পাস নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।