একাধিক ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে চিঠি দিলেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ২৫ ফেব্রুয়ারি সেই চিঠি পাঠানো হয়। সেই চিঠিতে রোহিঙ্গা সংকট থেকে শুরু করে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতির উল্লেখ রয়েছে। মায়ানমার নিয়ে ইউনুসের উদ্বেগের প্রতি সহমত পোষণ করেছেন গুতেরেস। এদিকে আগামী ১৩ মার্চ বাংলাদেশে পা রাখতে চলেছেন গুতেরেস। রাষ্ট্রসংঘের প্রধান জানান, মায়ানমার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আসিয়ান এবং আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে কাজ জারি রাখবেন তাঁর বিশেষ দূত। (আরও পড়ুন: কানাডার 'চোখ' বন্ধ করতে চায় USA! নিজ্জরকাণ্ডে এই 'দৃষ্টিই ছিল ট্রুডোর হাতিয়ার')
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্কে ৪০০০ চাকরি 'খাবে' AI… এই পরিবর্তনের 'আর্থিক প্রভাব' হবে $৭৪৫ মিলিয়ন
প্রসঙ্গত, এর আগে জানুয়ারি মাসেই চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করেছিল মায়ানমার সেনার ১২ জন সদস্য। এছাড়াও এর মধ্যে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টাও জারি থেকেছে বিভিন্ন জায়গায়। এই আবহে মায়ানমারের মংডু থেকে বাংলাদেশের টেকনাফে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েছে বহু রোহিঙ্গা। উল্লেখ্য, মংডু শহর ইতিমধ্যেই বিদ্রোহী আরাকান আর্মির কবলে। এই আবহে রোহিঙ্গারা সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করছে। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলা নিয়ে জয়শংকরকে জবাব ঢাকার, তৌহিদ বললেন...)
এর আগে মায়ানমারের গৃহযুদ্ধের আবহে বাংলাদেশ সীমান্তে মাঝেমাঝেই বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গিয়েছিল। এদিকে সীমান্তের ওপারের অশান্তির আঁচ এসে পড়ছে বাংলাদেশেও। এই আবহে জুন্তার পাশাপাশি আরাকান আর্মির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানানো হয় বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে। এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দাবি করেছিলেন, মায়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণে আছে তারা।
রিপোর্ট অনুযায়ী, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের প্রায় পুরোটাই দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে রাখাইনে জুন্তা বাহিনীর ঘাঁটি নিশানা করে হামলা শুরু করেছিল আরাকান আর্মি। এই আবহে রাখাইন প্রদেশের ১৭টি শহরের মধ্যে ১২টিরই দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি। এদিকে মায়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত আছে। এর আগে মংডু শহর দখলের সঙ্গে সঙ্গেই সেই ২৭০ কিলোমিটারের পুরোটাই দখলে চলে গিয়েছে আরাকান আর্মির। বর্তমানে রাখাইন প্রদেশের সিত্তে শহরটি জুন্তার দখলে রয়েছে। তবে প্রদেশের অধিকাংশের ওপরই জুন্তার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।
এদিকে রাখাইন প্রদেশে এখনও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা আছে বলে জানা গিয়েছে। এই আবহে রোহিঙ্গারা আপাতত জুন্তাকে সমর্থন করছে। বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে অনেক রোহিঙ্গা দেশে ফিরে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। আবার আরাকান আর্মিও নাফ নদের তীরে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। এই আবহে গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে ৮০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে দাবি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস নিজে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্তে বাংলাদেশ উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং বিজিবির নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।