'ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য আমি কখনও নোবেল শান্তি পুরস্কার পাব না।' পাকিস্তানের সুপারিশের পর ফের নিজের জন্য নোবেল দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।ট্রাম্পের ‘স্বপ্ন’পূরণে এসেছে এল ‘বন্ধু’ পাকিস্তান। নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম সুপারিশ করে বিবৃতি দিয়েছে ইসলামাবাদ। পাক সরকারের তরফে বিবৃতি করে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কৌশলী কূটনীতিতে ভারত ও পাকিস্তান, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সমঝোতায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর হস্তক্ষেপেই সংঘর্ষবিরতি সম্ভব হয়েছে।
এই আবহে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দাবি করেন, তিনি মার্কিন বিদেশ সচিব মন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে মিলেই রুয়ান্ডা ও কঙ্গোর মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি সম্পন্ন করেছেন। ‘এই যুদ্ধ ছিল অত্যন্ত রক্তক্ষয়ী এবং দীর্ঘমেয়াদি, কিন্তু আমরা একে থামাতে পেরেছি’, বলেন ট্রাম্প।
তিনি আফসোস করে বলেন, ‘আমি ভারত-পাকিস্তান, সার্বিয়া-কসোভো, মিসর-ইথিওপিয়া, রাশিয়া-ইউক্রেন কিংবা ইজরায়েল-ইরান-কোন ক্ষেত্রেই শান্তির জন্য নোবেল পাব না। তবে মানুষ জানে আমি কী করেছি, সেটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’ শুক্রবারও নিউ জার্সিতে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য তাঁর নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল।তাঁর কথায়, 'আমার শান্তি পুরস্কার পাওয়া উচিত, বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে। এটি একটি খুব বড় এবং কঠিন কাজ ছিল।' ট্রাম্প নোবেল কমিটিকেও লক্ষ্য করে বলেন যে এই পুরস্কার প্রায়শই উদার মতাদর্শের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের দেওয়া হয়।
অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত পাকিস্তানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যেই অসাধারণ কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন ট্রাম্প। কৌশলে তিনি ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সমঝোতা করিয়েছেন। ট্রাম্প দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছেন। এর ফলে বৃহত্তর সংঘাত এড়ানো গিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের বিপর্যয় আটকানো গিয়েছে।’ এর জন্যেই ২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার ট্রাম্পের পাওয়া উচিত বলে মনে করেছে ইসলামাবাদ। তাদের বক্তব্য, ‘ভারত এবং পাকিস্তানের সংঘর্ষে এই হস্তক্ষেপ প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে ট্রাম্পের ভূমিকার প্রমাণ দেয়। তিনি আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত নিরসনের উপরেই জোর দিয়ে এসেছেন।’
তবে বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি আগেই জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ৩৫ মিনিট ধরে ফোনে কথা হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি কারও মধ্যস্থতায় হয়নি। পাকিস্তানের দিক থেকে এসেছিল বিরতির প্রস্তাব। তাতে ভারত সম্মত হয়েছে। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ট্রাম্প আরও একবার দাবি করেন, ভারত এবং পাকিস্তান, দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাত তিনি থামিয়েছেন। তিনিই মধ্যস্থতা করেছেন। পাকিস্তানও ট্রাম্পের দাবিকে সমর্থন করে এসেছে প্রথম থেকেই। এবার পাকিস্তান চাইছে সেই ‘উদ্যোগের’ জন্য ট্রাম্প ২০২৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।