মেঘালয়ে হানিমুনে হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড। স্বামী রাজা রঘুবংশীকে খুনে অভিযুক্ত খোদ নববিবাহিত স্ত্রী সোনম রঘুবংশী। এবার সোনম-সহ বাকি অভিযুক্তদের নিয়ে মেঘালয়ে অপরাধের পুনর্নির্মাণ করেছে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট)। মঙ্গলবার সকালেই মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে সোনমদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেইসময় দেখা যায় যে ১৮ মিনিটেই পুরো ঘটনা ঘটিয়েছিল।
মঙ্গলবার রাজা হত্যায় অভিযুক্ত সোনম-সহ তিন যুবক বিশাল সিং চৌহান, আকাশ রাজপুত ও আনন্দ কুর্মীকে নিয়ে মেঘালয় পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী ও ফরেন্সিক দল সোহরায় ওয়েই সাওডাং জলপ্রপাতে পৌঁছায়।খুনের দিন রাজ মেঘালয়ে উপস্থিত ছিল না। তাই তাঁকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়নি। সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে চেরাপুঞ্জিতে। তারমধ্যেই সোনমদের নিয়ে অপরাধের পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ। পুরো দলটিকে নেতৃত্ব দেন পূর্ব খাসি পাহাড়ের এসপি বিবেক সিয়েম।
আরও পড়ুন-ওড়িশার টুরিস্ট স্পটে তরুণীকে ‘গণধর্ষণ’, বেঁধে রাখা হল বন্ধুকে, সুরক্ষা কোথায়?
অভিযুক্তদের ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে পুলিশ বোঝার চেষ্টা করা করে, কে কোন পথ দিয়ে এসেছিল, কে প্রথমে রাজাকে আক্রমণ করেছিল, কীভাবে খুন করা হয়েছিল, কীভাবে মৃতদেহ তুলে নিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল এবং তারপর সোনমরা কীভাবে সেখান থেকে পালিয়েছিল। অপরাধের পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে পুলিশ ঘটনাটি সম্পর্কে এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, সেদিন ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর রাজা শৌচালয়ে (টয়লেটে) যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন। সেই সময়ই সোনম রাজাকে খুনের করতে বলে। এরপরই তিন অভিযুক্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাজার উপর আক্রমণ করে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার ছুরিকাঘাত করে রাজাকে হত্যা করা হয় এবং তারপর চারজনই রাজার মৃতদেহ তুলে সেলফি পয়েন্ট থেকে ফেলে দেয়। সোনম এবং বাকি অভিযুক্তদের বুধবার আদালতে তোলা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ধৃতদের আরও কয়েক দিন হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হতে পারে।
মেঘালয় পুলিশের ডিজিপি ইদাশিশা নংরং জানান, সোনমের সব কথা এখনও বিশ্বাসযোগ্য নয়। বিয়ের এত অল্প দিনের মধ্যে কী কারণে এই নৃশংস খুন, কেন এই চক্রান্ত এখনও তার নির্ভরযোগ্য সব উত্তর ধৃতদের জেরা করেনি মেলেনি। প্রেমিক রাজের সঙ্গেই বাকি জীবন কাটাতেই এই খুন, নাকি তার পিছনে সোনমের অন্য আরও কারণ রয়েছে তা এখনও নিশ্চিত জানা যায়নি। তাই কেবল ত্রিকোণ প্রেমের জেরেই রাজা রঘুবংশী খুন হন, এমন কথা এখনই বিশ্বাস করতে নারাজ তদন্তকারীরা।তদন্তকারীরা জানান, খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য হল, ঘটনার নিখুঁত টাইমলাইন জানা এবং প্রত্যেক অভিযুক্তের ভূমিকা নিশ্চিত করা। ডিজিপি জানিয়েছেন, সোনম ও বাকি তিন আততায়ী এখনও জেরার মুখে অসঙ্গতিপূর্ণ কথা বলছে। অনেক ছিন্ন সূত্র জোড়া লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-ওড়িশার টুরিস্ট স্পটে তরুণীকে ‘গণধর্ষণ’, বেঁধে রাখা হল বন্ধুকে, সুরক্ষা কোথায়?