সামনেই লোকসভা নির্বাচন। এই আবহে ঘরোয়া বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ কেন্দ্রের কাছে। এহেন পরিস্থিতিতে এই প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রসংঘের 'ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম'-এর টেন্ডারে অংশ নেওয়ার ওপর 'নিষেধাজ্ঞা' জারি করা হয়েছে ভারতীয় রফতানিকারকদের ওপরে।
দেশে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পদক্ষেপ সরকারের
ভারতের ঘরোয়া বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বড় পদক্ষেপ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। মিন্টে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, রাষ্ট্রসংঘের 'ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম'-এর টেন্ডারে অংশ নিতে বারণ করা হয়েছে ভারতের চাল রফতানিকারকদের। এই সংক্রান্ত টেন্ডারে অংশ নিতে হলে সরকারের অনুমতি চাইতে হয়। তবে সেই ক্ষেত্রে সরকার রফতানিকারকদের অনুমতি দেবে না বলেই জানাচ্ছে মিন্টের রিপোর্ট। এদিকে সরকারের এহেন পদক্ষেপে দেশে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বিশ্বের চারটি দেশের পেট খিদের জ্বালায় পুড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। (আরও পড়ুন: গুলি-মিসাইল তৈরির কারখানায় ৩০০০ কোটি বিনিয়োগ আদানির, মেটাবে দেশের ২৫% চাহিদা)
উল্লেখ্য, এই প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রসংঘের 'ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম'-এর টেন্ডারে অংশ নেওয়ার ওপর 'নিষেধাজ্ঞা' জারি করা হয়েছে ভারতীয় রফতানিকারকদের ওপরে। প্রসঙ্গত, সামনেই লোকসভা নির্বাচন। এই আবহে ঘরোয়া বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ কেন্দ্রের কাছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতির হারও নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টায় আছে সরকার। তবে এসবের মাঝেই রাষ্ট্রসংঘের তরফ থেকে 'ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম'-এর আওতায় টেন্ডার ডাকা হয় ভাঙা চাল রফতানির জন্য। স্পেন, ক্যামেরুন, টোগো এবং আলজেরিয়ায় এই চাল পাঠানোর কথা।
প্রসঙ্গত, 'ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম'-এর মাধ্যমে রাষ্ট্রসংঘ সেসব দেশে চাল বা খাদ্য সামগ্রী পাঠিয়ে থাকে যেখানকার মানুষজন সংঘর্ষ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে খাদ্যের অভাবে ভুগছেন। এই আবহে ভারত থেকে বিভিন্ন সময়ে এই প্রকল্পের আওতায় খাদ্য সামগ্রী রফতানি হয়ে এসেছে বিগত দিনে। তবে সাম্প্রতিক টেন্ডার ডাকার পরই ভারত সরকারের তরফে রফতানিকারককে জানানো হয়েছে, এবারের টেন্ডারে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে না। রাষ্ট্রসংঘ টেন্ডার ডাকার পরই তাতে অংশগ্রহণের জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল কেন্দ্রের ডিরেক্টোরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেডের কাছে। তবে সরকার জানিয়েছে, সরকারি স্তরে আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে খাদ্য সামগ্রী পাঠাচ্ছে ভারত। এই আবহে অনেক আলোচনার পরে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেয় যাতে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের এই টেন্ডারে ভারতের রফতানিকারকরা অংশ না নেয়।
এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ভাঙা চালের রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এছাড়া ২০২৩ সালের জুলাই মাসে অ-বাসমতি চালের রফতানির ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তবে এই নিষেধাজ্ঞার পরও সরকারি স্তরে কিছু কিছু দেশে চাল রফতানির অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে যেসব দেশের সম্পর্ক ভালো, তাদের প্রয়োজনের ভিত্তিতে চাল পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই আবহে গোটা বিশ্বে চালের চাহিদা বেড়েছে। আর তাই আইএমএফ-এর তরফ থেকে ভারতকে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। তবে ঘরোয়া বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিষেধাজ্ঞা জারি রাখে কেন্দ্রীয় সরকার। আর এই প্রথমবার ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের টেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে ভারতীয় রফতানিকারকদের বারণ করেছে সরকার।