শুক্রবার রাজ্যসভায় একটি প্রাইভেট মেম্বার বিল উত্থাপন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।ইউনিফর্ম সিভিল কোড বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা নিয়ে বিল উত্থাপনের প্রস্তাব করতেই তুমুল প্রতিবাদে মুখর হলেন বিরোধীরা। বিজেপি এমপি কিরোদি লাল মিনা এই বিলটি উত্থাপন করতে ওঠেন। আর তখনই তীব্র প্রতিবাদ জানান কংগ্রেস, সিপিআই, সিপিএম, তৃণমূলের সদস্য়রা। বিরোধীদের দাবি, এই ধরনের বিল সামাজিক বন্ধনকে নষ্ট করে দেবে। ভারতে বৈচিত্রের মধ্যে যে ঐক্য রয়েছে তাকেও নষ্ট করে দিতে পারে এই বিল।এদিকে বিরোধী সদস্যরা এই বিলকে তুলে নেওয়ার দাবি জানান। তবে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের হস্তক্ষেপে এই বিলের উত্থাপনটি পাস হয়ে যায়। বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ৬৩টি। বিপক্ষে ভোট পড়ে ২৩টি।এদিকে অতীতেও এই বিলটি উত্থাপনের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু উচ্চকক্ষে তা উত্থাপন করা হয়নি।এই বিলের মাধ্যমে ধর্ম নির্বিশেষ সমস্ত নাগরিকদের ব্যক্তিগত অধিকারকে সুরক্ষিত করবে বলে দাবি করা হচ্ছে। এই বিলের মাধ্যমে জাতীয়স্তরে নজরদারি ও তদন্তকারী কমিটি তৈরির সুযোগ রয়েছে। ইউনিফর্ম সিভিল কোডকে বাস্তবায়িত করার জন্য এটাই অন্যতম ধাপ।এদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এবার গুজরাট ভোটের প্রচারে গিয়ে বিজেপি ইউনিফর্ম সিভিল কোডকে প্রয়োগ করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আর গুজরাট ভোটে বিপুল জনাদেশ নিয়ে জিতে যাওয়ার পরের দিনই বিলটি উত্থাপন করা হল রাজ্যসভায়।অন্যদিকে গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব ইউনিফর্ম সিভিল কোডের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এমনকী বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারেও ছিল এই প্রতিশ্রুতি। তবে এবার সেই প্রতিশ্রুতি পালনের জন্য় পদক্ষেপ করা শুরু করে দিল বিজেপি। এমনটাই মনে করা হচ্ছে। তবে প্রাইভেট মেম্বার বিলের ক্ষেত্রে যেটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে এটি থেকে আইন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ এটি সরকার প্রস্তাব করেনি। এটি মূলত আলোচনার জন্য, দেশে জনমত গঠনের জন্য কার্যকরী। তবে এভাবেই হয়তো জল পরীক্ষা করে নিতে চায় শাসক দল। বিভিন্ন রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্তরে যদিও অনেকটাই ধীরে চলো নীতি নিয়েছে দল। তবে গেরুয়া শিবির চায় সংসদে আলোচনা হলে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ও অন্যান্য দলেরা এই নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে বাধ্য হবে। সেটিই ভোটের ময়দানে ব্যবহার করে ফায়দা লোটার সম্ভাবনা রয়েছে।