নতুন যুগের উন্নয়নের প্রতীক হল ভিজিনজাম সমুদ্র বন্দর। এমনই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে আনুষ্ঠানিকভাবে জিনজাম সমুদ্র বন্দরের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিরুবনন্তপুরমে অবস্থিত গভীর সমুদ্রবন্দরটি বিশ্বব্যাপী জাহাজ চলাচল এবং বাণিজ্য রুটে ভারতের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সমুদ্র বন্দরের প্রজেক্টের দায়িত্বে ছিল ‘আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশ্যাল ইকোনমিক জোল প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থা। (আরও পড়ুন: প্রতিবেশী দেশকে দেউলিয়া করতে অঙ্ক কষছে ভারত, নিজের কর্মের ফল পাবে পাকিস্তান?)
আরও পড়ুন-'নিজের জগতে বাস করেন…!', ‘শরবত জিহাদ’ নিয়ে রামদেবকে তুলোধোনা দিল্লি হাইকোর্টের
সমুদ্র বন্দরের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'একদিকে এই বিশাল সমুদ্রে রয়েছে অসংখ্য সুযোগ অন্যদিকে, প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝখানে রয়েছে 'ভিজিনজাম আন্তর্জাতিক বহুমুখী সমুদ্রবন্দর', যা নতুন যুগের উন্নয়নের প্রতীক।' এরপরেই প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের নিশানা করে বলেন,'আমি মুখ্যমন্ত্রী (পিনারাই বিজয়ন)-কে এই কথা বলতে চাই...আপনি ইন্ডিয়া জোটের একজন শক্তিশালী স্তম্ভ। (কংগ্রেস সাংসদ) শশী থারুরও মঞ্চে বসে আছেন। আজকের অনুষ্ঠান অনেকের ঘুম উড়িয়ে করে দেবে। তিনি (অনুবাদক) এই লাইনগুলি অনুবাদ করতে পারেননি... কিন্তু বার্তাটি যেখানে যাওয়ার কথা সেখানে পৌঁছে গেছে।' (আরও পড়ুন: 'আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে মোদীর জন্যে', লাদেন খতমের বার্ষিকীতে বার্তা USA-র)
আরও পড়ুন: হেন করেঙ্গা, তেন করেঙ্গা! ফাঁকা পকেটে ভুলভাল প্রচার পাকিস্তানের
অন্যদিকে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই পিনারাই বিজয়ন রাজ্যের জনগণের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে এই ঐতিহাসিক প্রকল্পটি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে চালু করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, কেরলের মানুষের পক্ষ থেকে, আমি আবারও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি আদানি গ্রুপকে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অভিনন্দন জানাই।' এদিকে, বৃহস্পতিবার কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর তিরুবনন্তপুরমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানিয়েছেন। থারুরের এক্স-এ শেয়ার করা একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, তিনি তিরুবনন্তপুরমে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে করমর্দন করছেন, এবং পাশে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন দাঁড়িয়ে আছেন।এর আগে দলের মধ্যেই অন্তর্দ্বন্দ্বের দেখা গিয়েছিল কংগ্রেস সাংসদ শশীর প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রশংসায়।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে চলে যাওয়া পাকিস্তানিদের জন্যে মন কাঁদছে শাসকদলের নেতার, বললেন…
উল্লেখ্য, ৮,৮৬৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছে এই ভিজিনজাম সমুদ্র বন্দর প্রজেক্টে। গত ৪ ডিসেম্বর বন্দর 'কর্মাশিয়াল কমিশনিং সার্টিফিকেট' পেয়ে গিয়েছে। কেরল সরকার এই প্রজেক্টে দুই তৃতীয়াংশ টাকা ব্যয় করেছে। তারমধ্যে ‘ব্রেক ওয়াটার’ ঘিরে কাজের পুরো খরচই কেরল সরকারের ছিল বলে জানা যাচ্ছে।এতদিন পর্যন্ত ভারতের ৭৫ শতাংস ‘ট্রান্সশিপমেন্ট’র কন্টেনার শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দর দ্বারা পরিচালিত হত। যার ফলে একটা মোটা অঙ্কের 'ফরেন এক্সচেঞ্জ' ও রাজস্বের ক্ষতি হত। মনে করা হচ্ছে, দেশের সেই অসুবিধার জায়গাটি কাটিয়ে দেবে ভিজিনজাম বন্দর। এটি গভীর জলের বন্দর হওয়ায় বড় কার্গো জাহাজ নোঙর করার ক্ষেত্রে লাভদায়ক ভৌগলিক অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।ভিজিনজাম বন্দরের উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য আদানি গ্রুপের সঙ্গে কেরল সরকারের একটি ৪০ বছরের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে চালু হয়ে গেলে, এটি ভারতের কন্টেনার ট্রান্সশিপমেন্ট চাহিদার ৫০ শতাংশ পূরণ করতে পারবে। ফলে দুবাই, কলম্বো এবং সিঙ্গাপুরের মতো সমুদ্র বন্দরের উপর নির্ভরতা কমবে ভারতের।২০ মিটার গভীরতা সম্পন্ন এই বন্দরটিতে খুব কম ড্রেজিং-এর প্রয়োজন হয়। ভিজিনজাম বন্দর মেগাম্যাক্স কন্টেনার জাহাজ রাখতে পারে।