'কংগ্রেস সরকার গণতন্ত্রকে আটকে রেখেছিল।' জরুরি অবস্থা ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।বুধবার জরুরি অবস্থার ৫০ বছর। সেই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জরুরি অবস্থার স্মৃতিচারণ বই হিসেবে প্রকাশ পাচ্ছে। বুধবার সেই বইয়েরই উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বইয়ের নাম ‘এমারজেন্সি ডায়েরি’। (আরও পড়ুন: ইরানে ফেল আমেরিকা? 'গোয়েন্দা রিপোর্টে' নাক কাটতেই বিস্ফোরক ট্রাম্প)
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে হিন্দু বৃদ্ধ ও ছেলেকে গণপিটুনি, বাংলাদেশি পুলিশ অফিসারের কথায় বিতর্ক
দেশের সেই কালো দিন স্মরণ করে বই লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণার দিনকে মানুষ ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ হিসেবেই মনে রাখবে। এক্স বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দ্য এমারজেন্সি ডায়েরি' বইটি জরুরি অবস্থার চলাকালীন আমার অভিজ্ঞতার বর্ণনা তুলে ধরেছে। এটি সেই সময়ের অনেক স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে। যারা জরুরি অবস্থার সেই কালো দিনগুলি মনে রেখেছেন বা যাদের পরিবার সেই সময়ে কষ্ট ভোগ করেছে তাদের সকলকে আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার আহ্বান জানাচ্ছি।' আরেক পোস্টে মোদী লেখেন, 'যখন দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল, তখন আমি একজন তরুণ আরএসএস প্রচারক ছিলাম। জরুরি অবস্থা বিরোধী আন্দোলন আমার জন্য একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা ছিল। একই সঙ্গে, রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের সকল মানুষের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। আমি আনন্দিত যে ব্লুক্রাফ্ট ডিজিটাল ফাউন্ডেশন সেই অভিজ্ঞতাগুলি বই আকারে সংকলন করেছে, যার ভূমিকা লিখেছেন শ্রী এইচডি দেবেগৌড়া, যিনি নিজেই জরুরি অবস্থা বিরোধী আন্দোলনের একজন অগ্রদূত।' (আরও পড়ুন: ইরানে 'গায়েব' ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম, ১০টি পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব তা দিয়ে)
আরও পড়ুন-সামরিক-শিক্ষা ক্ষেত্র সহযোগিতা জোরদার! দুই IITর সঙ্গে মৌ স্বাক্ষর সেনার
তিনি আরও বলেন, 'দ্য এমারজেন্সি ডায়েরি- নরেন্দ্র মোদীর গণতন্ত্রের আদর্শের জন্য লড়াই এবং কীভাবে তিনি সারা জীবন এটি সংরক্ষণ ও প্রচারের জন্য কাজ করেছেন তার একটি প্রাণবন্ত চিত্র তুলে ধরেছে। এই বইটি তাদের সাহস এবং সংকল্পের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি যারা নীরব থাকতে অস্বীকার করেছিলেন।' একটি পৃথক পোস্টে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজকের দিনে ভারতীয় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত মূল্যবোধগুলিকে একপাশে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিলুপ্ত করা হয়েছিল এবং বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা, সমাজকর্মী, ছাত্র এবং সাধারণ নাগরিককে কারাগারে নির্বাসিত করা হয়েছিল।সেই সময়ে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস সরকার গণতন্ত্রকে আটকে রেখেছিল।' তাঁর কথায়, 'কোনও ভারতীয় কখনও ভুলতে পারবে না যে কীভাবে আমাদের সংবিধানের চেতনা লঙ্ঘিত হয়েছিল, সংসদের কণ্ঠস্বর রোধ করা হয়েছিল এবং আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ৪২তম সংশোধনী তাদের কুরুচিপূর্ণতার একটি প্রধান উদাহরণ। দরিদ্র, প্রান্তিক এবং নিপীড়িতদের বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল, এমনকি তাদের অপমানও করা হয়েছিল।'
আরও পড়ুন: ২৫% বকেয়া ডিএ মেটানো নিয়ে বড় দাবি রিপোর্টে, মহার্ঘ ভাতা বিজ্ঞপ্তিতে থাকবে চমক?
সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জন্য দেশের প্রতিটি ব্যক্তিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। তিনি জানান, 'তাঁরা ছিলেন দেশের সকল স্তরের, বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ যারা একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন একটি লক্ষ্য নিয়ে: ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো রক্ষা করা এবং আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যে আদর্শের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তা সংরক্ষণ করা। তাদের সম্মিলিত সংগ্রামের জন্যই তৎকালীন কংগ্রেস সরকার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে এবং নতুন নির্বাচনের ডাক দিতে বাধ্য হয়েছিল, যাতে খুব খারাপ ভাবে পরাজিত হয়। তিনি আরও বলেন, 'আমরা আমাদের সংবিধানের নীতিগুলিকে শক্তিশালী এবং বিকশিত ভারতের আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা যেন অগ্রগতির নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারি এবং দরিদ্র ও নিপীড়িতদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।'