ইন্দোরের ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলার রহস্য এখনও পুরোপুরি কাটেনি। আসল খুনিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে।এই আবহে এক ট্রাভেল ব্লগার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামকে চিঠি দিয়েছে মেঘালয় পুলিশ। (আরও পড়ুন: ট্রেনে সংরক্ষিত আসনের টিকিট কাটার নিয়মে বড় বদল, কী জানাল রেল?)
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি যে 'অবান্তর' তা স্পষ্ট হল পাক উপপ্রধানমন্ত্রীর কথাতেই
সম্প্রতি ইন্দোরের দম্পতি সোনম রঘুবংশী ও রাজা রঘুবংশীর একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আনেন এক ট্রাভেল ব্লগার। ভিডিওটি সোনমের স্বামী রাজা রঘুবংশীকে হত্যার ঠিক আগের বলেই মনে করা হচ্ছে।দেব সিং নামে ওই ব্লগার তার ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছেন ভিডিওটি। যাতে দেখা যাচ্ছে, যেদিন রাজা রঘুবংশীকে খুন করা হয় সেদিনই তাঁরা মেঘালয়ের ডাবল-ডেকার লিভিং রুট ব্রিজের পথে ট্রেকিং করে চলেছেন। সোনমের পরনে ছিল একটি সাদা শার্ট ও হাতে একটি লাঠি। কোনও কিছু না বুঝেই ভিডিওটি রেকর্ড করেছিলেন ওই ট্রাভেল ব্লগার। তিনি ভিডিওর ক্যাপশনে লেখেন, ‘গত ২৩ মে আমি মেঘালয়ের ডাবল ডেকার রুট ব্রিজ ঘুরতে যাই। গতকাল সেখানকার ভিডিওগুলি পরীক্ষা করছিলাম তাতেই ইন্দোরের দম্পতির রেকর্ডিং পেয়েছি, সকাল ৯:৪৫ মিনিটের দিকে আমরা যখন নীচে নামছিলাম তখন এই দম্পতি নোংরিয়াত গ্রামে রাত কাটানোর পরে উপরের দিকে যাচ্ছিলেন। আমার মনে হয় এটিই ছিল ওই দম্পতির শেষ রেকর্ডিং এবং সোনম একই রকমের সাদা শার্ট পড়েছিল যেরকম রাজার দেহের কাছে পাওয়া গিয়েছিল।’ (আরও পড়ুন: মদের কারণেই বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাড়িতে পুড়েছিল নগদ টাকা! দাবি রিপোর্টে)
আরও পড়ুন: মহাকাশে যেতে আরও অপেক্ষা করতে হবে ভারতের শুভাংশুকে, ষষ্ঠবার কেন স্থগিত মিশন?
পূর্ব খাসি পাহাড়ের এসপি বিবেক সিয়াম বলেন, তারা প্রথমে বয়ান রেকর্ড করার জন্য দেব সিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু কোনও সাড়া পায়নি।তাঁর কথায়, 'আমরা দেব সিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং বিস্তারিত জানার জন্য ইনস্টাগ্রামে চিঠি লিখেছি। আমরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তিনি কোনও সাড়া দেননি।তাই আমরা এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ইনস্টাগ্রামকে সহায়তার জন্য আবেদন করেছি যাতে তার বয়ান রেকর্ড করা যায়।' পুলিশের দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত খুনিদের এবং ষড়যন্ত্রকারীদের সবাইকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে সোনম রঘুবংশী, রাজ কুশওয়াহা এবং তিন সুপারি কিলার বন্ধু। এখনও পর্যন্ত পুলিশের দাবি, সোনমের ‘বয়ফ্রেন্ড’ রাজ কুশওয়াহা এই খুনের মূল ষড়যন্ত্রকারী এবং সোনম তাকে এই পুরো ষড়যন্ত্রে সমর্থন করেছিল। একইসঙ্গে রাজ রঘুবংশীকে হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদের পরিচিত তিনজনের হাতে। (আরও পড়ুন: খলিস্তানি চরমপন্থা কানাডার জন্য হুমকি, দাবি সেই দেশের গোয়েন্দা রিপোর্টে)
আরও পড়ুন: এখনও 'ICU'-তে পাকিস্তানের রহিম ইয়ার খান বিমানঘাঁটি, বন্ধ থাকবে ৪ জুলাই পর্যন্ত
ঘটনার বিবরণ
গত ২০ মে মধুচন্দ্রিমায় মেঘালয়ে ঘুরতে যান নবদম্পতি রাজা রঘুবংশী ও সোনম রঘুবংশী। ২৩ মে চেরাপুঞ্জিতে পৌঁছনোর পর নিখোঁজ হয়ে যান তাঁরা। এই ঘটনার ১১ দিন পর খাদ থেকে উদ্ধার হয় রাজার দেহ। তবে খোঁজ মেলেনি সোনমের। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে খোঁজাখুঁজির পর, সোনমকে মেঘালয় থেকে ১,২০০ কিলোমিটার দূরে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের একটি ‘ধাবা’ থেকে পাওয়া যায়। সেখান থেকে বাড়িতে ফোন করেন সোনম। সেই ফোনের সূত্র ধরে তাঁকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, সোনমের প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। এছাড়া এই হত্যায় সাহায্য করার জন্য আকাশ রাজপুত, বিশাল সিং চৌহান এবং আনন্দ কুর্মি নামে আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গেছে রাজা রঘুবংশীকে খুনের জন্য এই ৩ জনকে অর্থের বিনিময়ে ভাড়া করা হয়েছিল। এই সপ্তাহের শুরুতে, শিলংয়ের একটি স্থানীয় আদালত পাঁচজন অভিযুক্তকেই আট দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে।