'ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ অসম' (আলফা)-র উপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞা আরও পাঁচ বছরের জন্য বাড়িয়ে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সোমবার কেন্দ্রের তরফ থেকে এই পদক্ষেপ করা হয়।
এই প্রসঙ্গে এদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেই অনুসারে, অসমে এখনও পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে এই গোষ্ঠী। পাশাপাশি, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদা তোলার নামে জুলুমবাজি ও হিংসা ছড়ানোরও অভিযোগ রয়েছে। বস্তুত, এই উগ্রপন্থী গোষ্ঠী এখনও অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংযোগ রেখে চলেছে।
প্রসঙ্গত, আলফা-র উপর সর্বপ্রথম নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয় ১৯৯০ সালে। তারপর থেকে বারবার সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। শেষবার এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছিল ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর। ১৯৬৭ সালের বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধী) আইনের আওতায় আলফা-র বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আলফা-র যে সমস্ত শাখা এবং সম্মুখ সংগঠন রয়েছে, সেগুলি সব একত্রিতভাবে এমন সব বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থেকেছে, যা ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার পক্ষে বিপজ্জনক।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, 'আলফা ইতিমধ্যেই তার লক্ষ্য ঘোষণা করে দিয়েছে। তা হল - ভারত থেকে অসমকে বিচ্ছিন্ন করা। তারা এখনও তাদের সংগঠন চালানোর জন্য মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে, তোলাবাজি করছে এবং হিংসা ছড়াচ্ছে।...'
'...এই সংগঠন বেআইনিভাবে অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ১৬টি অপরাধমূলক মামলায় জড়িত থাকার খবর পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে একাধিক বিস্ফোরণ ও বিস্ফোরণের চেষ্টার মতো ঘটনা রয়েছে। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালে ১ জুলাই পর্যন্ত অসমে তারা এই ঘটনাগুলি ঘটিয়েছে। এমনকী, ২০২৪ সালে, স্বাধীনতা দিবসের দিনও তারা অসমের একাধিক জায়গায় আইইডি ও বিস্ফোরক পেতে রেখেছে।'
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, গত পাঁচ বছরে আলফা-র তিন উগ্রপন্থী সদস্যকে নিকেশ করা হয়েছে। পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে তাদের খতম করা হয়। আলফা-র সদস্যদের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রুজু করা হয়েছে। যার মধ্যে তিনটিতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এবং তিনজন সদস্যকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়াও, আলফা আরও ২৭টি অপরাধমূলক ঘটনায় যুক্ত ছিল বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, আলফা-র ৫৬ জন ক্যাডারকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৬৩ জন ক্যাডার আত্মসমর্পণ করেছে।
এর পাশাপাশি, আলফা-র সদস্যদের হেফাজত থেকে ২৭টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৫০ রাউন্ড কার্তুজ, ন'টি গ্রেনেড এবং দু'টি আইইডি উদ্ধার করা হয়েছে।