আগামী দিনে আর কখনও কোনও উপনির্বাচনে তাঁর দল অংশগ্রহণ করবে না! একথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে দিলেন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-এর সুপ্রিমো তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী।
সম্প্রতি, উত্তরপ্রদেশের মোট ন'টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে সাতটি আসনেই জয়ী হন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র প্রার্থীরা। বাকি দু'টি আসনে জেতে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (সপা)।
মায়াবতীর অভিযোগ, উপনির্বাচনের এই ভোটাভুটি আদতে ভুয়ো! তাঁর দাবি, ক্ষমতায় থাকার কারণে বিজেপি ও তার জোটসঙ্গীরা সরকারি বিভিন্ন ব্যবস্থাপনাগুলির অপপ্রয়োগ করছে এবং সেগুলি ব্যবহার করে ভোটে জিতছে। তাই, এই ধরনের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে তিনি যোগ দিতে চান না।
মায়াবতীর আরও অভিযোগ, আগে যখন ব্যালট পেপার ব্যবহার করে ভোটাভুটি হত, তখনও ভোটে কারচুপি করা হত। আর এখন ভোটের ফল নিজেদের পক্ষে আনতে সরকার পক্ষ ইভিএম-এ কারচুপি করছে।
মায়াবতী ভোটে কারচুপির এই প্রবণতাকে গণতন্ত্রের পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি অভ্যাস বলেও অভিযোগ করেছেন।
এই প্রসঙ্গেই বিএসপি নেত্রী বলেন, যত দিন না নির্বাচন কমিশন ভুয়ো নির্বাচন আটকাতে কঠোর পদক্ষেপ করবে, ততদিন বিএসপি কোনও উপনির্বাচনে অংশ নেবে না। কারণ, উপনির্বাচনগুলির ফলাফল সম্পূর্ণভাবে শাসকদলগুলির দ্বারা বেআইনি ও অনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।
কিন্তু, এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি মায়াবতী বলতে চাইছেন, কারচুপি যা হওয়ার, তা শুধুমাত্র উপনির্বাচনগুলিতেই হয়? পূর্ণাঙ্গ নির্বাচনের সময় কোনও বেআইনি বা অনৈতিক কাজ হয় না?
এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিএসপি সুপ্রিমো। তাঁর যুক্তি হল - পূর্ণাঙ্গ নির্বাচনের পর ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে পালাবদল হবে কিনা, পুরোনো শাসকদলই ক্ষমতায় থাকবে, নাকি নতুন কোনও পক্ষ জয়ী হবে, সেটা সবসময় আগাম ঠাওর করা সম্ভব হয় না। তাই, সরকারি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনাগুলি ভোটে কারচুপি করার সাহস পায় না। কিন্তু, উপনির্বাচনে পালাবদলের কোনও সম্ভাবনা থাকে না বলেই শাসকশিবিরের অঙ্গুলি হেলনে কাজ করে সরকারি সংস্থাগুলি।
এই কারণেই মায়াবতী ঘোষণা করেছেন, এবার থেকে তাঁর দল কেবলমাত্র লোকসভা, বিধানসভা এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক নির্বাচনগুলিতে পূর্ণ শক্তিতে লড়াই করবে। কিন্তু, কোনও উপনির্বাচনে প্রার্থী দেবে না।
মায়াবতী একইসঙ্গে চন্দ্র শেখরের নেতৃত্বাধীন এএসপি এবং কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, বিএসপি-কে দুর্বল করতে কংগ্রেস দলিত ভোট ভাগ করার চক্রান্ত করেছে। তাই অনুগামীদের উদ্দেশে মায়াবতীর বার্তা, তাঁরা যেন ভুলেও কংগ্রেস ও এএসপি-কে সমর্থন না করেন।
মায়াবতীর আরও অভিযোগ, উপনির্বাচনে অপ্রত্যাশিত ফলাফল সামনে আসার পরই সম্ভল এলাকায় অশান্তি ছড়িয়েছে। যার জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর মতে, ওই এলাকায় অবিলম্বে সমীক্ষার কাজ বন্ধ করা উচিত। এবং এলাকার উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে, তবেই ফের সমীক্ষা শুরু করা উচিত।