বাসভবন থেকে বস্তা ভর্তি নগদ টাকা উদ্ধার কাণ্ডে কাঠগড়ায় ওঠা বিচারপতি যশবন্ত ভর্মা এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের গড়ে দেওয়া তিন বিচারপতির তদন্ত কমিটি রিপোর্টে জানায়, বিচারপতি যশবন্ত ভর্মার বাসভবনেই ছিল রাশি রাশি ৫০০ টাকার নোটের স্তূপ।৫৫ জন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান সংগ্রহের পর ৬৪ পৃষ্ঠার রিপোর্ট জমা দিয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, বিচারপতিকে অপসারণের সুপারিশও করা হয়েছে।এবার তদন্ত কমিটির ইমপিচমেন্টের সুপারিশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
এই আবহে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার ইমপিচমেন্টের সুপারিশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে নিজেকে নিরাপরাধ দাবি করলেন টাকা কাণ্ডে অভিযুক্ত বিচারপতি ভর্মা। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট বাতিলের দাবি জানিয়ে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো সুপারিশ রদ করার অনুরোধ করেছেন তিনি। ইলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি ভর্মার দাবি, রিপোর্ট পেশের আগে তদন্ত কমিটির সামনে তাঁকে তার নিজের কথা ও যুক্তি বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সোমবার থেকে সংসদে শুরু হচ্ছে বাদল অধিবেশন। ঠিক তার আগে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিচারপতি ভর্মা।
আরও পড়ুন-পহেলগাঁও জঙ্গিদের নিয়ে US পদক্ষেপে কৃতজ্ঞতা, ভারত-চিন নিয়েও ঝোড়ো বার্তা জয়শঙ্করের
চলতি বছরের দোলের দিন দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি যশবন্ত ভর্মার বাসভবনের গুদামে আগুন লেগে যায়। দমকলকর্মীরা আগুন নেবাতে গিয়ে আধপোড়া নোটের রাশি রাশি বান্ডিল উদ্ধার করেন। সেই থেকে বিতর্কের সূত্রপাত। ওই বিচারপতিকে দিল্লি থেকে ইলাহাবাদ হাইকোর্টে সরিয়ে দেওয়া হয়। ক্রমে মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ওই ঘটনার অনুসন্ধানের জন্য হাইকোর্টের তিন বিচারপতিকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।সম্প্রতি ওই অনুসন্ধান কমিটি একটি মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দেয় সুপ্রিম কোর্টে।
আরও পড়ুন-পহেলগাঁও জঙ্গিদের নিয়ে US পদক্ষেপে কৃতজ্ঞতা, ভারত-চিন নিয়েও ঝোড়ো বার্তা জয়শঙ্করের
সেই তদন্ত কমিশন প্রাথমিক তদন্তের ফলাফল সম্পর্কে বিচারপতি যশবন্ত ভর্মার কাছ থেকে জবাব চাওয়া হয়েছিল। বিচারপতি বর্মা উত্তরে জানিয়েছেন, তিনি বা তাঁর পরিবারের সদস্যরা কখনও স্টোররুমে কোনও নগদ অর্থ রাখেননি এবং অগ্নিনির্বাপণ অভিযানের সময় তাদের কখনও পোড়া নোটের বস্তা দেখানো হয়নি। তদন্ত কমিটি ২০২৫ সালের ৩ মে সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট জমা দেয়, যাতে বলা হয় যে পোড়া টাকার বস্তাগুলি বিচারপতি ভর্মার পরিবারের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি স্টোররুমে ছিল। তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে বিচারপতি ভর্মার ইমপিচমেন্টের সুপারিশ করেছিলেন। বিচারপতি ভর্মা পদত্যাগ করতে অস্বীকার করায় সরকার তার অভিশংসনের জন্য সংসদে প্রক্রিয়া শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করেছিল।