পোশাক বিধি না মেনে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে নাচার অভিযোগে দুই তরুণীকে গ্রেফতার করল ইরানের পুলিশ। স্মৃতিস্তম্ভে তাদের নাচের ভিডিয়ো সামনে আসতেই দুই তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, তরুণীদের এমন কাণ্ডের পরেই শহীদদের পরিবারের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম নেয়। তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারপরেই পুলিশের তরফে পদক্ষেপ করা হয়। তরুণীদের গ্রেফতারের পর তাদের বিচারবিভাগীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হিজাব না পরেই অনলাইন কনসার্টে পারফর্ম, ইরানে গ্রেফতার গায়িকা
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি তেহরানের। অভিযোগ, পোশাক বিধি না মেনে দুই তরুণী শহীদদের কবরস্থানে গিয়ে যেভাবে নাচ করেছেন তাতে কবরের পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে। এছাড়াও, এটি শরিয়া আইনের বাইরে। পুলিশ বিবৃতিতে জানিয়েছে, এর ফলে শহীদদের পরিবারের সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তারা অভিযুক্ত দুই তরুণীকে গ্রেফতার করেছে। ইরানি কর্তৃপক্ষ বলছে, দুই তরুণীকে যেখানে নাচ করতে দেখা গিয়েছে সেই জায়গাটি হল ইরান-ইরাক যুদ্ধে নিহতদের সম্মানে তৈরি স্মৃতিস্তম্ভ, যেটি তেহরানে অবস্থিত। পুলিশ জানিয়েছে, রলস বানানোর জন্য দুই তরুণীকে সেখানে নাচতে দেখা গিয়েছে। অনলাইনে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, জিন্স পরে দুই তরুণী সেখানে নাচ করছেন। যা ইরানের পোশাক বিধি অনুযায়ী নিষিদ্ধ। ইরানের কর্তৃপক্ষ তাদের তাদের পোশাককে অনুপযুক্ত বলে সমালোচনা করেছে। শুধু তাই নয় শাস্তি হিসেবে দুজনের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পরে কঠোর পোশাক বিধি চালু হয় ইরানে। নিয়ম অনুযায়ী, মহিলাদের অবশ্যই তাদের চুল এবং ঘাড় ঢেকে রাখতে হবে এবং প্রকাশ্যে ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। তাছাড়া তারা প্রকাশ্যে নাচতে পারবেন না। তবে বিভিন্ন সময়ে মহিলারা এই পোশাক বিধির বিরোধিতা করেছেন। এর বিরোধিতায় ২০২২ সালে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ইরান। বিশেষ করে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনির হেফাজতে মৃত্যুর পরে বিক্ষোভ শুরু হয়। তাকে পোশাক বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।তার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয়। কয়েক ডজন নিরাপত্তা কর্মীসহ কয়েকশ মানুষ নিহত হন। হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়।