সম্প্রতি বিতর্কিত হিজাব আইন প্রত্যাহার করেছে ইরান সরকার। আর তার এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই এবার হোয়াটসঅ্যাপ এবং গুগল প্লে স্টোরের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ইরান। ইন্টারনেটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রথম সারির দেশের মধ্যে অন্যতম হল ইরান। গত দুবছর ধরে সেখানে হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল প্লে স্টোর বন্ধ থাকায় অনেকেই ভিপিএনের মাধ্যমে এই সমস্ত অ্যাপ ব্যবহার করতেন। তবে এবার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় সুবিধা হল নাগরিকদের। মঙ্গলবার এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। ইরান সরকারের এমন পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে আন্তর্জাতিক মহল।
আরও পড়ুন: ‘নেতাদের মুণ্ডচ্ছেদ হবে..’, ইজরায়েলি হুঁশিয়ারি হুথিদের,এল বিস্ফোরক স্বীকারোক্তিও
ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি মাসুদ পেজেশকিয়ানের নেতৃত্বে এই বিষয়ে একটি বৈঠক হয়। তারপরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী সাত্তার হাশেমি জানান, ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ দূর করার প্রথম পদক্ষেপ এটি। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে আরও কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, হিজাব নিয়ে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু হতেই ২০২২ সালে হোয়াটসঅ্যাপ এবং গুগল প্লে স্টোর এর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ইরান সরকার। যদিও শুধু এই সামাজিক মাধ্যমই নয়, আরও কিছু সামাজিক মাধ্যম গত কয়েক বছরে নিষিদ্ধ করেছে ইরান। কট্টরপন্থী মাহমুদ আহমাদিনেজাদের পুনর্নির্বাচনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের বিক্ষোভের পর থেকে ইরানে ফেসবুক, এক্স এবং ইউটিউব সহ বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
ইন্টারনেটের প্রতি কঠোর মনোভাবের জন্য ইরান সরকার বছরের পর বছর ধরে দেশের নাগরিক, পশ্চিমি দেশ, জাতিসংঘ এবং রাজনৈতিক কর্মীদের সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। আমেরিকা ভিত্তিক ফ্রিডম হাউস বলেছে, যে ইরান ইন্টারনেট ব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিশ্বের তিনটি দেশের মধ্যে একটি। বাকি দুটি হল চিন এবং মায়ানমার। গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিগ টেককে ইরান সহ ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণকারী অন্যান্য দেশগুলিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে আহ্বান জানিয়েছিল।এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর হিজাব আইন প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইরান। যার ফলে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইরানের পার্লামেন্টে অনুমোদিত আইনটি সরকারের কাছে আর পাঠানো হবে না। আর এবার দুটি অ্যাপ থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হল। এর পিছনে পেজেশকিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলেই মনে করা হচ্ছে।