মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদের প্রাথমিক নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত জোহরান মামদানি। নিউইয়র্ক সিটির ডেমোক্র্যাটিক মেয়র পদে প্রাথমিক নির্বাচনে বামপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরান মামদানির কাছে পরাজয়ের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো।আর এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এক বড় চমক হিসেবে দেখা হচ্ছে।কারণ প্রথমবার নিউ ইয়র্কের মেয়র পদের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন একজন মুসলিম। (আরও পড়ন: ইরান নিয়ে অবস্থান 'বদল', মার্কিন হামলার 'সমালোচনায়' ভারত)
আরও পড়ুন: ডিগবাজির পর ডিগবাজি! ইরানে পরমাণু কেন্দ্রে হামলা নিয়ে কথার ঠিক নেই ট্রাম্পের
পরাজয়ের পর প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'আজ রাত আমাদের রাত ছিল না। আমি মামদানিকে ফোন করে জয়লাভের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি।' ৯০ শতাংশ ভোট গণনা শেষে তিনি ৪৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। বাকি ভোট গিয়েছে জোহরান মামদানির ঝুলিতে। তবে চূড়ান্ত ফল জানতে কয়েক দিন লাগতে পারে।এই প্রাথমিক ফলাফলই আগামী নভেম্বরে মেয়র নির্বাচনে কে জিতবেন, তা নির্ধারণ করে দিতে পারে। কিন্তু প্রাথমিক ফল তাঁর পক্ষে হওয়ায়, বড় কিছু না ঘটলে মামদানিই মেয়র হতে চলেছেন।২০২৫ সালের নিউ ইয়র্কের মেয়র পদের জন্য ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির জোহরান মামদানি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এক সময় মামদানি তহবিল সংগ্রহ, প্রগতিশীল নীতি এবং ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্টের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
আরও পড়ুন-'অপারেশন সিঁদুরে ছিলাম!' স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে কমান্ডোকে রক্ষাকবচ দিল না SC
জোহরান মামদানি ১৯৯১ সালের ১৮ অক্টোবর উগান্ডার কাম্পালায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মাহমুদ মামদানি একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত উগান্ডার মার্কসবাদী স্কলার এবং মা মীরা নায়ার ভারতীয়-আমেরিকান চলচ্চিত্র নির্মাতা। পাঁচ বছর বয়সে মামদানি পরিবারের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে চলে আসেন। সাত বছর বয়সে তাঁরা নিউ ইয়র্কে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।জোহরান ব্যাঙ্ক স্ট্রিট স্কুল ফর চিলড্রেন থেকে পড়াশোনা শেষ করে ব্রঙ্কস হাই স্কুল অফ সায়েন্স থেকে স্নাতক হন। মামদানি বাউডইন কলেজ থেকে ২০১৪ সালে আফ্রিকানা স্টাডিজে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। কলেজে থাকাকালীন তিনি স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন অধ্যায়ের সহ-প্রতিষ্ঠা করেন।
আরও পড়ুন: পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সামনেই ইসলামাবাদের মুখোশ টেনে খুললেন রাজনাথ, বললেন...
জোহরান মামদানি তার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেন একজন ফোরক্লোজার প্রিভেনশন কাউন্সিলর হিসেবে, পরে স্থানীয় প্রচারে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন। এরমধ্যে রয়েছে আলী নাজমি, খাদের এল-ইয়াতিম, রস বারকান এবং টিফানি কাবানের ভূমিকা। তিনি ২০১৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্টদের সঙ্গে যোগ দেন।মামদানি ২০২০ সালের ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিজ জয়ী হয়েছিলেন। ২০২১ সালে কুইন্সের ৩৬তম ডিস্ট্রিক্টের জন্য নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ২০২২ এবং ২০২৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।ইজরায়েল-প্যালেস্টাইনের ক্ষেত্রে তিনি বিডিএসকে সমর্থন করেন, অবৈধ বসতি স্থাপনের বিরোধিতা করেন এবং গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। একইসঙ্গে ইহুদি-বিদ্বেষ প্রত্যাখ্যান করেন এবং ইজরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে সমর্থন করেন। তিনি বৈষম্য বিরোধী আইনের পক্ষে এবং লিঙ্গ-নিশ্চিতকরণমূলক তহবিল হ্রাসের প্রতিবাদ করেন।