'ভারত কী নিজস্ব অর্থনীতি বিপন্ন করবে।' রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা প্রসঙ্গে মন্তব্য করলেন ব্রিটেনের নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পর সম্প্রতি মার্কিন সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ভারত-সহ ৩ দেশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা চালিয়ে গেলে চাপানো হবে চড়া শুল্ক।এই আবহে রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি করার পক্ষে ব্যাখ্যা দিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার।
টাইমস রেডিও-র সাক্ষাৎকারে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, 'রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেবল তেলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি নিরাপত্তা, জ্বালানি এবং ঐতিহাসিক সহযোগিতার মতো অনেক দিকের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এক সময় আমাদের কিছু পশ্চিমি অংশীদার অস্ত্র বিক্রি করত না। বরং তারা আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলির কাছে সেই অস্ত্র বিক্রি করত, যারা কেবল আমাদের উপর আক্রমণ করার জন্যই অস্ত্রগুলি ব্যবহার করত।' তিনি আরও বলেন, 'আজকের পরিস্থিতি এমন যে আমরা আগে যে দেশগুলির কাছ থেকে তেল কিনতাম তারা এখন অন্যদের কাছে তেল বিক্রি করছে এবং আমাদের জ্বালানি বাজার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের কী বিকল্প আছে? আমাদের কি অর্থনীতি বন্ধ করে দেওয়া উচিত?'
এখানেই থামেননি তিনি। ভারতীয় হাইকমিশনার বলেছেন, অনেক দেশ তাদের নিজস্ব সুবিধার জন্য সেই দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে যা ভারতের জন্য সমস্যার কারণ। এরপরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম না করে তিনি আরও বলেন, 'আমরা কী আপনার কাছে আনুগত্যের পরীক্ষা চাইছি?' রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সংঘাত পরিস্থিতি সম্পর্কে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। এটি যুদ্ধের সময় নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ের দেশের প্রেসিডেন্টের কাছে এই কথা বলেছেন। ভারত চায় এই যুদ্ধ এবং বিশ্বের সমস্ত সংঘাত যত দ্রুত সম্ভব সমাপ্ত হোক।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প কিছু দিন আগেই বলেছিলেন, রাশিয়া যদি ৫০ দিনের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি সমঝোতায় পৌঁছোতে রাজি না হয়, তা হলে রাশিয়া ও তার বাণিজ্যিক বন্ধু দেশগুলির উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। পরদিনই ভারত, চিন ও ব্রাজ়লকে ট্রাম্পের সুরে একই রকম হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোর মহাসচিব মার্ক রাট। গ্রাহামের মন্তব্যের পর এই নিয়ে তৃতীয় বার ফের ভারত-সহ তিন দেশকে হুঁশিয়ারি দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।