
Betvisa
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports
প্রায় এগারো বছর আগের কথা। এক আইটি সংস্থায় ৩০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করতেন বর্ধমানের কবিতা। নিরাপদ কেরিয়ার, নিশ্চিন্ত জীবন। আর পাঁচজন ইঞ্জিনিয়ারের মতোই চাকরি করেই জীবন কাটিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু কবিতার ঝোঁক ছিল অন্য কোথাও। ভারতীয় শেয়ার বাজার নিয়ে তাঁর অনেক আগে থেকেই আগ্রহ ছিল। কিন্তু সত্যি বলতে সেভাবে শেয়ার বাজারের মারপ্যাঁচ বুঝতেন না। চাকরি পেয়ে জীবন কিছুটা থিতু হতেই তাই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের পদ্ধতি শিখতে শুরু করেন তিনি। আজ, কবিতার পোর্টফোলিওর মূল্য ২ কোটি টাকারও বেশি। গত ১১ বছরে তিনি শুধু শেয়ার বাজারের বিভিন্ন দিক বুঝেছেন তা নয়, রীতিমতো বিশেষজ্ঞ হয়ে গিয়েছেন।
পেশা হিসাবে স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিয়োগ যে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ, তা বলাই বাহুল্য। বিশেষ করে ফিউচার এবং অপশনস ট্রেডিং। কিন্তু, এরই মধ্যে এমন কয়েকজন আছেন, যাঁরা এর রহস্যও ক্র্যাক করে ফেলেন। চাকরি করতে করতেই ট্রেডিংয়ের কারবার চালিয়ে যান তাঁরা। কবিতা বর্তমানে একটি অস্ট্রেলীয় আইটি সংস্থায় কাজ করেন। কিন্তু কাজের বাইরে তাঁর একটাই ধ্যান ও জ্ঞান- অপশনস ট্রেডিং।
কবিতা জানান, তিনি খুব অল্প বয়সেই টাকা উপার্জনের মূল্য এবং তা সঞ্চয় করার পদ্ধতিটা শিখে ফেলেন। ছোট থেকেই উজ্জ্বল ছাত্রী ছিলেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে টিউশন করা শুরু করেন। সেই সময়েই পড়ুয়া পিছু ২৫০ টাকা করে বেতন পেতেন।
কলেজে উঠেও টিউশনি করতেন কবিতা। ছোটোবেলা থেকেই ক্লাসে ফার্স্ট হতেন। তা সত্ত্বেও, কবিতাকে নিজের শহরের কাছের কলেজে ভর্তি হতে হয়েছিল। তিনি বলেন, তাঁর বাবা হস্টেলের খরচ দিতে পারতেন না। প্রতিদিন তিন ঘণ্টা বাসে যাতায়াত করতেন। সন্ধ্যায় বাড়িতে আসার পর কবিতা রাত ৯টা পর্যন্ত টিউশনি করতেন। তিনি জানান, এই আয়ই তাঁকে ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হওয়া ও টাকা উপার্জনের গুরুত্ব বোঝাতে শুরু করে।
কলেজ শেষে পুণেতে এক আইটি সংস্থায় প্রথম চাকরি পান তিনি। আর সেই চাকরি করতে গিয়েই এক সহকর্মীকে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে দেখেন। শেয়ার বাজারের নাম শুনলেও, সেখানে কীভাবে বিনিয়োগ করা হয়, সেটা জানতেন না তিনি। এ বিষয়ে একটু পড়াশোনা করতেই তাঁর আগ্রহ বেড়ে যায়। ক্রমেই শেয়ার বাজারের জ্ঞানের জগতে হারিয়ে যান। আর সেই জ্ঞানের থেকেই আসে সাহস।
এরপর অল্প অল্প টাকা নিয়ে কবিতা ইন্ট্রাডে ট্রেডিং শুরু করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে দিন ২০০-৪০০ টাকা লাভ হত। বেশ কয়েকদিন এভাবে চলার পরেই সাহস আসে। একটি পোর্টফোলিও তৈরি করার জন্য ৩ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত ঋণ নেন। সহকর্মীকে ক্যারিয়ার পয়েন্ট আইপিও-তে অ্যাপ্লাই করতে দেখে তিনিও সেখানে বিনিয়োগ করেন। এই একটি সিদ্ধান্তেই তাঁর জীবনকে পালটে দেয়।
কবিতা জানান, তিনি যে শেয়ার বাজারে টাকা খাটাচ্ছেন, তা বাড়িতে বলেননি। বাড়িতে যখন ঋণের চিঠি পৌঁছলো, বাবা-মা রেগে কাঁই! আর পাঁচটা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের মতোই তাঁরা শেয়ার বাজার মানেই ফাটকা ভাবতেন। জুয়ার মতোই আরকি! ফলে সেখানে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগে ওঁরা মোটেও খুশি ছিলেন না।
কিন্তু কবিতা তাঁর পোর্টফোলিও খুলে দেখাতেই চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যায় তাঁদের। মোট ২০ লক্ষ টাকার শেয়ার কবিতার নামে! এরপরে অবশ্য তাঁকে আর বাধা দেননি কবিতার মা-বাবা।
টাকা আয়ের মতো হারিয়েছেনও অনেক। কোনওদিন এমনও গিয়েছে যে ৮ লক্ষ টাকার লোকসান হয়েছে। কিন্তু প্রতিটা লোকসান থেকে শিক্ষা নিয়েছেন তিনি। আর তার থেকেই আরও বেশি করে টাকা পুনরূদ্ধারের পদ্ধতি শিখেছেন কবিতা। আপাতত মূলত সাপ্তাহিক এবং মাসিক সাপ্তাহিক অপশনে ট্রেড করেন কবিতা।
ট্রেডিংয়ে আজ তুমুল সফল তিনি। একদিনে ১৪ লক্ষ টাকাও পর্যন্ত আয় করেছেন। কিন্তু এরপরেও শুধু স্টক মার্কেটকেই পেশা করার বিরুদ্ধে কবিতা। তাঁর মতে, একটি স্থায়ী চাকরি থাকা সবসময়েই গুরুত্বপূর্ণ।
যারা শেয়ার বাজারে নতুন নামছেন, তাঁদের কী বলবেন?
6.88% Weekly Cashback on 2025 IPL Sports