নির্বাচন কমিশন ভোট চুরিতে জড়িত। বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধনের মাঝেই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী।এরপরেই কংগ্রেস নেতার অভিযোগ খণ্ডন করে ভারতের নির্বাচন কমিশন কড়া জবাব দিয়েছে। দেশের বিরোধী দলনেতার বিস্ফোরক অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ এবং ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মন্তব্য বলে ব্যাখ্যা করেছে কমিশন।
রাহুল গান্ধীর বিস্ফোরক অভিযোগ
বিহারের বিশেষ নিবিড় সংশোধন অনুশীলন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়, কংগ্রেস নেতা অভিযোগ করেছেন যে, ভোটার জালিয়াতির উদ্দেশ্য হলো ক্ষমতাসীন বিজেপিকে লাভবান করা। রাহুল গান্ধী বলেন, 'আমাদের কাছে প্রমাণ আছে যে নির্বাচন কমিশন ভোট চুরিতে জড়িত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, নির্বাচন কমিশনে যাঁরা এই কাজে জড়িত- ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত তাঁদের কাউকে ছাড়া হবে না।' বিরোধী দলনেতার হুঁশিয়ারি, 'আপনারা ভারতের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। এটা সরাসরি দেশদ্রোহ। আপনারা অবসরপ্রাপ্ত হলেও, আমরা আপনাদের খুঁজে বার করব।' তিনি আরও বলেন, বিহারে যে হারে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে, তা গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আঘাত।
তাঁর সংযোজন, 'মধ্যপ্রদেশ ও লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর আমাদের সন্দেহ হয়েছিল। যা মহারাষ্ট্র নির্বাচনের পর আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে যখন আমরা দেখলাম যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় হঠাৎ করেই ১ কোটি নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে। তখনই আমরা বুঝতে পারি যে কিছু একটা হচ্ছে। এরপরেই ছয় মাস ধরে চলে তদন্ত। সেই তদন্তের পর আমরা যা পেয়েছি তা পরমাণু বোমার সমান। এটা যদি একবার বিস্ফোরণ হয় কমিশনের পালানোর পথ থাকবে না।'
নির্বাচন কমিশনের কড়া প্রতিক্রিয়া
রাহুলের মন্তব্যের পরেই কমিশন বলেছে, 'আমরা এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ উপেক্ষা করি। প্রতিদিন যে ভিত্তিহীন অভিযোগ একের পর এক তোলা হচ্ছে, তাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না কমিশন।'আরও বলা হয়েছে, প্রতিদিন বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সব নির্বাচনী আধিকারিকদের, যাঁরা অবাধ, মুক্ত ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে নির্বাচনী কাজ করে চলেছেন, তাঁদের এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যে কান না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিহারের বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনী প্রসঙ্গে রাহুলের অভিযোগ, কমিশনের এসব কাজ হচ্ছে শাসকদল বিজেপির সুবিধা করিয়ে দেওয়া। প্রসঙ্গত, বিহারের বিশেষ সংশোধিত তালিকা প্রকাশ নিয়ে বিরোধী দলগুলি একজোট হয়েছে। কারণ, নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে, এরপর তা গোটা দেশে কার্যকর হবে। শুক্রবার এই ইস্যুতে রাজ্যসভা ও লোকসভা উত্তাল হয়ে ওঠে।চলতি বছরের ২৪ জুন, বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। এর ফলে রাজ্যজুড়ে আতঙ্ক ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়, কারণ বিহারে শেষবার এমন নিবিড় সংশোধন হয়েছিল ২০০৩ সালে।এই তালিকা সংশোধনী নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও বেশ কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে। সব মিলিয়ে বিহারের ভোটার তালিকা হলেও একযোগে বিরোধীরা কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ওরফে বিজেপির বিরুদ্ধে আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছে।