আবারও দিল্লি হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়তে হল উইকিপিডিয়াকে। উল্লেখ্য, তাদের বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা রুজু করেছে সংবাদ সংস্থা এএনআই।শুক্রবার সেই মামলার শুনানি চলছিল দিল্লি হাইকোর্টে। সেই সময়েই আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানায়, যে কেউ চাইলেই উইকিপিডিয়ার তথ্যাবলী এডিট বা সম্পাদনা করতে পারেন। যা অত্যন্ত 'ভয়ঙ্কর'।শুনানি চলাকালীন সংশ্লিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চের অন্যতম সদস্য বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যম প্রসাদ প্রশ্ন করেন, 'যে কেউ চাইলেই উইকিডিয়ার পেজে তথ্য সম্পাদনা করতে পারেন? যদি, যে কেউ ইচ্ছা মতো এভাবে তথ্যাবলী বদল করে পারেন, তাহলে সে ঠিক কেমন ধরনের পেজ?'এরপরই আদালত সম্পাদনার এই পদ্ধতিকে 'বিপজ্জনক' বলে অভিহিত করে। যদিও উইকিপিডিয়ার প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত বরিষ্ঠ আইনজীবী জয়ন্ত মেহতা দাবি করেন, পেজে সম্পাদনার কাজ করার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আইন মেনেই সব কাজ করতে হয়।ওই আইনজীবীর যুক্তি, উইকিপিডিয়া হল ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মতোই একটি মঞ্চ, যেখানেই সকলেই তাঁদের মতামত জানাতে পারেন!যদিও আইনজীবী মেহতার ব্যাখ্যা, 'এটি সেই সোশাল মিডিয়া নয়, যেখানে আপনার একটি পেজ রয়েছে এবং যে কেউ সেখানে যা ইচ্ছা লিখতে পারছেন। এটি হল এমন একটি এনসাইক্লোপিডিয়া, যেখানে ইউজাররা চাইলে তথ্য সম্পাদনা ও যুক্ত করতে পারেন, যদি সেই তথ্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়।'তাঁর আরও দাবি, 'উইকিপিডিয়ার পেজে যাঁর ইচ্ছা হবে, তিনিই সম্পাদনা করতে পারেন এবং এভাবেই এই পেজটি বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছে। তবে, তার আগে সংশ্লিষ্ট সমস্ত তথ্য যাচাই করতে হবে।'উল্লেখ্য, উইকিপিডিয়া তাদের পেজে ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই সম্পর্কে লিখেছিল যে, দেশের বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচারক হিসাবে কাজ করে তারা। এএনআই-কে 'প্রোপাগ্যান্ডা টুলকিট' বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।যা অবমাননাকর বলে অভিযোগ তুলে উইকিপিডিয়ার বিরুদ্ধে সটান মামলা রুজু করে এএনআই কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, অবিলম্বে ওই পেজটি অপসারিত করতে হবে।এদিনের শুনানিতে এএনআই-এর তরফে উপস্থিত ছিলেন তাদের আইনজীবী সিদ্ধান্ত কুমার। তিনি বলেন, উইকিপিডিয়া প্রকৃত তথ্য তুলে ধরার দাবি করে। এক্ষেত্রে তারাই সংবাদ সংস্থার মানহানি করেছে।উল্লেখ্য, এর আগেও এই মামলায় দিল্লি হাইকোর্টের কাছে ভর্ৎসিত হতে হয়েছিল উইকিপিডিয়াকে। আদালত সেই তিন ব্যক্তির পরিচয় জানতে চেয়েছিল, যাঁরা এএনআই সম্পর্কে তথ্য সম্পাদনা করেছিলেন। কিন্তু, উইকিপিডিয়া সেই তথ্য এখনও পর্যন্ত সামনে আনেনি।এই ঘটনায় মূল মামলাটি আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতুবি রাখা হয়েছে।