মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে গত ৫ দিন ধরে অগ্নিগর্ভ লস অ্যাঞ্জেলস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার ন্যাশনাল গার্ড নামানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু পরিস্থিতির একটুও বদল হয়নি। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের তেজ বাড়ছে । তেমনই বাড়ছে প্রতিবাদীদের দমন করতে পুলিশের সক্রিয়তা। ক্রমেই বাড়ছে সংঘর্ষ, ছড়াচ্ছে উত্তাপ। এই আবহে লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস স্থানীয়ভাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসের কেন্দ্রস্থলে জারি করা হয়েছে কার্ফু। (আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে সীমান্তে সংঘাতের ছক ইউনুস সরকারের, বাংলাদেশি সেনা প্রধান কী করলেন?)
আরও পড়ুন: ম্যাক্রোঁর পর এবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করতে পারবেন না ইউনুস
মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৫, ১০ এবং ১১০ নম্বর ফ্রিওয়ে সংলগ্ন ১ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে কার্ফু চলেছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, 'লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের কেন্দ্রস্থলে ভাঙচুর , লুঠপাট বন্ধ করার জন্য কার্ফু জারি করা হচ্ছে। যদি কেউ লস অ্যাঞ্জেলসের বাসিন্দা না হন, বা সেখানে কোনও জরুরি কাজ না থাকে, তাহলে ওই জায়গায় যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।প্রশাসন প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে। যারা কার্ফু ভাঙবেন, তাঁদের গ্রেফতার করা হবে।' এছাড়া আইনি পদক্ষেপ করারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। শহরের নিরাপত্তা রক্ষায় এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশের প্রধান জিম ম্যাকডোনেল। তিনি জানান, টানা কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা বেড়েছে এবং শনিবার থেকে শহরে বেড়েছে অবৈধ ও বিপজ্জনক আচরণ। (আরও পড়ুন: নাম শুনেই গরম তেলে ফোড়নের মতে লাফিয়ে উঠেছিলেন পাক সাংসদ, কী এই 'ব্রিগেড ৩১৩'?)
আরও পড়ুন-হানিমুন হত্যাকাণ্ডের পুননির্মাণ! সোনমকে নিয়ে আসা হল মেঘালয়ে
আরও পড়ুন: এবার চিনের নেটওয়ার্ক ভাঙতে ভারতের শরণাপন্ন আমেরিকা, সামনে এল বড় তথ্য
একদিন আগেই লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েন করা হয় মার্কিন মেরিন সেনা। একইসঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৪,০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য। শহরের বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় প্রশাসন এই ব্যবস্থা নিয়েছে।ট্রাম্প বলেন, 'আপনারা যা দেখছেন, তা শান্তি ও জাতীয় নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আক্রমণ। যারা বিদেশি পতাকা নিয়ে দাঙ্গা করছে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি অনুপ্রবেশ চালাতে চায়। আমরা তা হতে দেব না।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা কোনও শহরকে বিদেশি শত্রুর হাতে তুলে দেব না। এরা শত্রু।' অন্যদিকে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম বলেছেন, ট্রাম্পের অভিবাসন ক্র্যাকডাউন অপরাধীদের গগ্রেফতারের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে গেছে এবং ডিশওয়াশার, মালী, দিনমজুর এবং ট্রাম্পের তার সমর্থন ছাড়াই ক্যালিফোর্নিয়া ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত অন্যান্য রাজ্যের সতর্ক হওয়া উচিত।
এদিকে আইসিই এক বিবৃতিতে বলেছে, সেনাবাহিনী ফেডারেল স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করছে এবং ফেডারেল অফিসারদের রক্ষা করছে। কারণ, তারা প্রতিদিনের অভিযানে থাকেন। এই পরিবর্তন সৈন্যদের নির্বাসনের মতো আইন প্রয়োগকারী পদক্ষেপে জড়িত হওয়ার কাছাকাছি নিয়ে গেছে। যেমন ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন বিরোধী অভিযান পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গার্ডের অফিসারদের ওপর আক্রমণকারী ব্যক্তিদের সাময়িকভাবে আটক করার ক্ষমতা রয়েছে তবে শেষ পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোই গ্রেফতার করবে।
আরও পড়ুন-হানিমুন হত্যাকাণ্ডের পুননির্মাণ! সোনমকে নিয়ে আসা হল মেঘালয়ে
উল্লেখ্য, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ রুখতে মরিয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় এসেই বেআইনি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কড়া আইন এনেছেন ট্রাম্প। তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরিয়েও দেওয়া হয়েছে সরকারি উদ্যোগে। গত কয়েকদিন ধরেই ট্রাম্পের এই অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামছে দলে দলে মানুষ। ন্যাশনাল গার্ডের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগে রাস্তায় নামছেন প্রতিবাদীরা। গত কয়েকদিন ধরে চলা এই অস্থিরতার পর এই আদেশ জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ২০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর ।