একটি মেলা চলাকালীন দূষিত জল খাওয়ার ফলে মৃত্যু হল ৬ জনের। এছাড়াও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন শতাধিক। ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরু থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তুমাকুরু জেলার চিন্নেনাহাল্লি গ্রামে। সেখানে একটি মেলা হচ্ছিল। সেই মেলা চলাকালীন দূষিত জল খাওয়ার ফলে তিন শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
আরও পড়ুন: বেশি জল খাওয়ায় মৃত্যু মহিলার, দায়ী ওয়াটার টক্সিসিটি! কতটা জল খেলে এমন হতে পারে
জানা যাচ্ছে, চিন্নেনাহাল্লি গ্রামে গত রবিবার থেকে ৬ দিনের মেলা শুরু হয়েছে। যার নাম হল ‘মন্দির মেলা’। এই মেলাকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার ভক্তের ভিড় হয়ে থাকে। প্রায় ৩০ বছর ধরে বন্ধ থাকার পর এবছর এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল গ্রামটিতে। তাতে কর্ণাটকের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি প্রতিবেশী রাজ্য ও অন্ধপ্রদেশ থেকেও হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়েছে। তবে মেলার প্রথম দিনেই ঘটে বিপত্তি। গ্রামে মেলা চলাকালীন জল খাওয়ার পর প্রথমে ৩৫ জনেরও বেশি মানুষের পেট ব্যথা, বমি হতে শুরু করে। তাদের অনেককে মধুগিরি মহকুমা হাসপাতাল এবং তুমাকুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরবর্তী দু দিনে আরও বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদেরকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই প্রথমে তিনজন মারা যান। বুধবার তুমাকুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই প্রবীণ নাগরিক এবং মধুগিরির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি তিন বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়। ঘটনার পরে পরেই মেলায় সরবরাহ করা জলের নমুনা পরীক্ষা করা হয় তাতে ওই জল খাওয়ার অযোগ্য বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে মধুগিরির বিধায়ক তথা সমবায় মন্ত্রী কে এন রাজন্না, মন্ত্রী জি পরমেশ্বরাও হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থ রোগীদের সঙ্গে দেখা করে তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। পরমেশ্বরা বলেছেন, বার্ধক্যজনিত কারণে সংক্রমণের তীব্রতা সহ্য করতে না পারার কারণে সম্ভবত দুজন প্রবীণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে ওভারহেড ট্যাঙ্ক থেকে সরবরাহ করা জল দূষিত ছিল। ওভারহেড ট্যাঙ্ক এবং আরও প্ল্যান্টের জলের নমুনাগুলি পরীক্ষার জন্য একটি ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। তাতে জানা গিয়েছে, ট্যাঙ্কের জল পানযোগ্য উদ্দেশ্যে অনুপযুক্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই এই জল সরবরাহ বন্ধ করেছি। পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিক (পিডিও)-কে দায়িত্বে অবহেলার জন্য শোকজ করা হবে।’
এদিকে, পাইপলাইন বসানোর সময় দূষিত জলের সঙ্গে পানীয় জল মিশে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করেন মন্ত্রী রাজন্না। জেলা পঞ্চায়েত আধিকারিকরা দূষণের কারণ খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত করছেন বলে তিনি জানান। অন্যদিকে, রাজ্য সরকার মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রীরা বলেন, তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এবিষয়ে আলোচনা করবেন। এই ঘটনার পরেই জেলা প্রশাসন গ্রামে কলের জল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে এবং ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করছে। এছাড়া সমস্ত নাগরিককে ফুটিয়ে জল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।