১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের শেষে ইরান-ইজরায়েলের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরেই ইউটার্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।হঠাৎ করেই তিনি চিনকে উৎসাহ দিলেন ইরান থেকে আবার তেল কিনতে, যা তাঁর আগের ‘ম্যাক্সিমাম প্রেসার’ নীতির সম্পূর্ণ উল্টো।ট্রাম্প জানালেন, চিন ইরানের কাছ তেল কিনলে, আর আপত্তি নেই তাঁদের। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার একদিন পরই কার্যত ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন ট্রাম্প।
মঙ্গলবারই ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তারপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লেখেন, 'এখন চিন ইরানের কাছ থেকে তেল কেনা চালিয়ে যেতে পারবে। আশাকরি, ওরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকেও কিনবে। এই কাজ করতে পেরে গর্ব অনুভব করছি।' এই বার্তার জেরে কূটনৈতিক মহলে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা শুধু ট্রাম্পের আগের অবস্থানের পরিবর্তন নয় বরং মার্কিন বিদেশনীতির ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। কারণ বহু বছর ধরে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তেল এবং পেট্রোপণ্য রফতানি করে ইরানের যে আয়, তা আটকাতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখেন ট্রাম্পের পূর্বসূরিরাও। এই আবহে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি পূর্বের অবস্থান থেকে সরছেন ট্রাম্প?
আরও পড়ুন-'গণতন্ত্রকে আটকে রেখেছিল!' জরুরি অবস্থার ৫০ বছরে কংগ্রেসকে তুলোধোনা প্রধানমন্ত্রী মোদীর
ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামেও প্রভাব পড়ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমেছে এবং শেয়ার বাজার কিছুটা মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যে ইরানের কাছ থেকে তেল কেনায় ট্রান্প চিনকে ছাড়পত্র দিলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তেলের দামে ৬ শতাংশ পতন ঘটে।অথচ মাত্র এক মাস আগেই যুক্তরাষ্ট্র ইরান-চিন তেল বাণিজ্যের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এদিকে, ইরানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব সম্পর্কে ট্রাম্পের বক্তব্যে ধরা পড়ছে মিশ্র বার্তা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, 'আমি ইরানে শাসনের পরিবর্তন চাই না, কারণ সেটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে।' এই মন্তব্য ট্রাম্পের আগের অবস্থানের সঙ্গে একেবারে বিপরীত।
আরও পড়ুন-'গণতন্ত্রকে আটকে রেখেছিল!' জরুরি অবস্থার ৫০ বছরে কংগ্রেসকে তুলোধোনা প্রধানমন্ত্রী মোদীর
কূটনীতিবিদদের মতে, তেল আমদানিতে চিনকে উৎসাহ দিয়ে ট্রাম্প হয়তো রাশিয়া ও চিন প্রভাব রুখতে নতুন কৌশলের পথে হাঁটছেন। বিশ্বজুড়ে বাজারেও এর প্রভাব পড়তে পারে। ফলে ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিতে আরও বড় রদবদলের আভাস মিলছে এই বার্তায়।