বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তে থেকে থেকেই শোন গিয়েছে গুলির আওয়াজ। তবে সেই গোলাগুলি চলেছে বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে গৃহযুদ্ধের জেরে এই গোলাগুলি চলেছে। আপাতত বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এই রাখাইন প্রদেশের প্রায় পুরোটাই বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে। এই আবহে গত ২১ মার্চ বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি চালিয়েছিল আরাকান আর্মি। এবং তাতে গুলিবিদ্ধ হন দু'জন। ঘটনাটি ঘটে বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে। জানা গিয়েছে, গুলিবিদ্ধদের একজন বাংলাদেশি এবং একজন রোহিঙ্গা। (আরও পড়ুন: আঙুল ইউনুসের দিকে,বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলায় কেন্দ্রের পদক্ষেপের আর্জি RSS-র)
আরও পড়ুন: কাঁটার সিংহাসনে ইউনুস! নাহিদের দলের নেতা বললেন, ‘যুদ্ধ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে…’
বাংলাদেশি সংবাদপত্র প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের একজন প্রাক্তন সদস্য দাবি করেছেন, গরু পাচারের চেষ্টার সময় আরাকান আর্মি গুলি চালিয়েছিল। সেই সময়ই গুলিবিদ্ধ হয় এই দুই। জানা গিয়েছে, গুলিবিদ্ধদের একজনের নাম মহম্মদ জাহাঙ্গির। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক, বয়স ১৯ বছর। এদিকে অপর জখম ব্যক্তির নাম মহম্মদ হোসেন, বয়স ২৭ বছর। তিনি বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা। (আরও পড়ুন: জাল আধার-প্যান বানিয়ে দিল্লিতে ধৃত পশ্চিমবঙ্গের ৩ সহ ৮ চক্রী,জালে বহু বাংলাদেশি)
আরও পড়ুন: 'ইউনুস বনাম ওয়াকার'-এর মধ্যে বাংলাদেশি সেনাপ্রধানকে সরানো নিয়ে মুখ খুললেন সারজিস
এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল করিম বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ভাজাবনিয়া সীমান্তের ওপারে মায়ানমারের একটি চেকপোস্ট আছে। সেটি বর্তমানে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির দখলে। ২১ মার্চ রাতে সেই পোস্ট থেকে ৭ থেকে ৮ রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছিল। দু'জনই মায়ানমার ভূখণ্ডে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এদিকে এই ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং বাংলাদেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও বেশি সতর্ক হয়েছে। (আরও পড়ুন: 'নগ্ন... নোংরা...', বাংলাদেশ সেনাকে নিয়ে বোমা ফাটালেন 'বিপ্লবী' NCP নেতা)
আরও পড়ুন: মোদী-ইউনুস বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশের অনুরোধ নিয়ে কী ভাবছে ভারত, জানালেন জয়শংকর
এর আগে মায়ানমারের গৃহযুদ্ধের আবহে বাংলাদেশ সীমান্তে মাঝেমাঝেই বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গিয়েছিল। এদিকে সীমান্তের ওপারের অশান্তির আঁচ এসে পড়ছে বাংলাদেশেও। এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দাবি করেছিলেন, মায়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণে আছে তারা। রিপোর্ট অনুযায়ী, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের প্রায় পুরোটাই দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি। (আরও পড়ুন: আওয়ামি লিগ নিয়ে সেনার গোপন বৈঠকের কথা সামনে, হাসনাতের পাশে নেই তাঁরই দল?)
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে রাখাইনে জুন্তা বাহিনীর ঘাঁটি নিশানা করে হামলা শুরু করেছিল আরাকান আর্মি। এই আবহে রাখাইন প্রদেশের ১৭টি শহরের মধ্যে ১২টিরই দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি। এদিকে মায়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত আছে। এর আগে মংডু শহর দখলের সঙ্গে সঙ্গেই সেই ২৭০ কিলোমিটারের পুরোটাই দখলে চলে গিয়েছে আরাকান আর্মির। বর্তমানে রাখাইন প্রদেশের সিত্তে শহরটি জুন্তার দখলে রয়েছে। তবে প্রদেশের অধিকাংশের ওপরই জুন্তার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মাঝে মধ্যেই এয়ারস্ট্রাইক করছে জুন্তা।