বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরির স্মৃতি বিজড়িত কাছাড়িবাড়িতে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় গতকাল তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল ভারত। এই আবহে এবার বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে মুখ খোলা হল। এই বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রক দাবি করেছে, কোনও বিদ্বেষের কারণে নয়, বরং দুই পর্যটকের মধ্যে বচসার জেরে সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এদিকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নাকি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল গত ১০ জুন। এরই সঙ্গে বাংলা ভাষার প্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদানকে যে তারা অস্বীকার করে না, এই বিষয়েও দাবি করে ঢাকা। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মৌলবাদীরা সেদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের দাবি করে আসছে বহু বছর ধরে। এছাড়াও বিভিন্ন সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন স্থাপত্য বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে সেই দেশে। (আরও পড়ুন: ইরানের আকাশসীমা বন্ধের জেরে ঘোরানো হল বা ফিরল এয়ার ইন্ডিয়ার ১৫টি বিমান)
আরও পড়ুন: অভিশপ্ত এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে বেঁচে থাকা একমাত্র যাত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন PM মোদী
উল্লেখ্য, এর আগে ব্রিটেনের মাটিতে বসে ভারতীয় মিডিয়ার বিরুদ্ধে নিজের খেয়াল খুশি মতো অনেক অভিযোগই করেছিলেন মহম্মদ ইউনুস। তাঁর দাবি, ভারতীয় মিডিয়ার কারণেই নাকি ভারতের 'বেস্টফ্রেন্ড' হতে পারছে না বাংলাদেশ। সংখ্যালঘু অত্যাচার নিয়ে নাকি ভারতীয় মিডিয়াতে 'ভুয়ো খবর' ছড়ানো হয়। তবে লন্ডনে বসে যখন ইউনুস এই সব বড় বড় কথা বলছেন, তখন তাঁর দেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িতে হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা। এরই মাঝে বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত কাছারিবাড়িতে দুষ্কৃতীরা অবাধে ভাঙচুর চালায় সম্প্রতি। এবং সেই খবর বাংলাদেশি মিডিয়াতেই প্রকাশ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, আপাতত কাছারিবাড়িতে অনির্দিষ্টকালের জন্য দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। (আরও পড়ুন: 'বন্ধু' ইরানে হামলা 'সখা' ইজরায়েলের, কী বার্তা দিল ভারত?)
আরও পড়ুন: ‘১৫টি নিউক্লিয়ার বোমা…’, তেহরানে ইজরায়েলি হামলায় ৬ ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত
জানা গিয়েছে, কাছারিবাড়িতে হামলার জেরে বেশ কিছু মূল্যবান জিনিসপত্রের ক্ষতি হয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় ইউনুসের দেশের পুলিশ স্বভাবতই নিষ্ক্রিয়। ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে খবরের চ্যানলে দেখা গেলেও পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি এখনও। ঘটনা সূত্রপাত গত ৮ জুন। বিশ্বকবির সিরাজগঞ্জের বাড়ি ঐতিহাসিকভাবে কাছারি বাড়ি নামেই অধিক পরিচিত। এখানেই রবীন্দ্র মেমোরিয়াল মিউজিয়াম গড়ে উঠেছে। সেই মিউজিয়ামে ওই দিন গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। সেই দর্শনার্থীর অভিযোগ, তাঁকে অফিস ঘরে আটকে রাখা হয়। শারীরিকভাবে হেনস্থাও করা হয়েছিল। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার স্থানীয়রা মিউজিয়ামের সামনে মানববন্ধন করছিলেন। এ সময় একদল লোক রবীন্দ্র-বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর করতে থাকে। এই ঘটনায় দেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কারা হামলা চালিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর শাহজাদপুরের জমিদারি কিনে নিয়েছিলেন। তখন এই কাছাড়িবাড়িটি ঠাকুর পরিবারের হস্তগত হয়েছিল।