কোটা সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন রক্তক্ষয়ী হয়ে উঠতেই ওপার বাংলা ছেড়ে এপারে চলে আসতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। সুতরাং আওয়ামি লিগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়। ভারতে আশ্রয় নেয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর বাংলাদেশে গড়ে ওঠে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু এই তদারকি সরকার কতদিন চলবে? বাংলাদেশে কি সাধারণ নির্বাচন হবে না? যদি হয় তাহলে তা কবে? এইসব প্রশ্ন এখন পদ্মাপারের মানুষের মনে উঠতে শুরু করেছে। তবে শনিবার দুটি সম্ভাব্য সময় জানিয়ে দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস।
এদিকে শনিবার ব্রিটিশ সাংসদ রূপা হকের সঙ্গে বৈঠক করেন মহম্মদ ইউনুস। সেই বৈঠকে সাধারণ নির্বাচনের সময় নিয়ে একটা ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। দুটি সম্ভাব্য সময় বলেছেন তিনি। মহম্মদ ইউনুসের কথা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন হতে পারে। অথবা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে সাধারণ নির্বাচন হতে পারে পদ্মাপারে। তবে সেই নির্বাচন হবে একদম অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ বলে ব্রিটিশ সাংসদ রূপা হককে নিশ্চয়তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস।
আরও পড়ুন: সাইবার প্রতারণায় অর্থ খোয়া গেলে পোর্টালে অভিযোগ করতে হবে, লালবাজারের বড় পদক্ষেপ
অন্যদিকে বাংলাদেশে এখনও শান্তি ফিরে আসেনি। হিন্দুদের উপর নির্মম অত্যাচার হচ্ছে। ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় মানুষজন পালিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ চোরাপথে এপার বাংলায় এসেও পড়ছেন। জঙ্গিরাও ঢুকে পড়ছে বলে অভিযোগ। তবে পুলিশ ও বিএসএফ তাদের ধরে ফেলছে। কিন্তু সে কথা মানতে নারাজ বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল রাতেই এক বাংলাদেশি তরুণীকে এনআরএস হাসপাতালের সামনে থেকে আটক করেছে কলকাতা পুলিশ। এই আবহে ব্রিটিশ সাংসদ রূপা হককে সরাসরি মহম্মদ ইউনুস বলেন, ‘গত তিনটি নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এখানে ভুয়ো সংসদ, ভুয়ো সাংসদ এবং ভুয়ো স্পিকার ছিল।’
এছাড়া বাংলাদেশে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছিল এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনকালে জনগণের উপর নিপীড়নের ঘটনাগুলি রূপার কাছে তুলে ধরেন মহম্মদ ইউনুস। এখানে ভোটে রিগিং এবং অশান্তি হতো বলেও জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। ব্রিটিশ সাংসদ রূপা হককে বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে মহম্মদ ইউনুস বললেন, ‘দেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন হতে পারে এই বছর ডিসেম্বর মাসে অথবা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি কোনও এক সময়ে। গোটা দেশ এখন জনগণের কণ্ঠস্বর ফিরে পেয়েছে। তাঁদের কণ্ঠ জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।’ আর ব্রিটিশ সাংসদ রূপা হকের কথায়, ‘বাংলাদেশ দেখে সত্যিই আমি উৎসাহিত। আগামী সাধারণ নির্বাচন দেখতে বাংলাদেশে ফিরে আসার ইচ্ছা আছে।’