শ্রীনগর বিমানবন্দরে অতিরিক্ত কেবিন লাগেজের জন্য এক সেনা আধিকারিকের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তাঁর হামলায় স্পাইসজেটের চার কর্মীর মেরুদণ্ডের ফ্র্যাকচার হয়েছে, সেই সঙ্গে গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে অভিযোগ।যেভাবে গোটা বিমানবন্দরজুড়ে কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছেন ওই সেনাকর্তা, সেটাকে খুনে আচরণ বলেই মনে করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।আর এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জানা গিয়েছে, ওই উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিকের শ্রীনগর থেকে দিল্লিগামী স্পাইসজেট বিমান ধরার কথা ছিল। বিমান সংস্থাটি জানিয়েছে, ৭ কেজির বেশি কেবিন লাগেজ বহন করা যায় না। কিন্তু ওই ব্যক্তি এই মাপের থেকে অনেক বেশি পরিমাণ লাগেজ নিয়ে যাচ্ছিলেন। তাই তাঁকে অতিরিক্ত টাকা দিতে বলা হয়। এরপরই ওই সেনা আধিকারিক বিমান সংস্থার কর্মীদের একাধিকবার ঘুষি ও লাথি মারেন বলে অভিযোগ। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই সেনা আধিকারিকের মারের চোটে স্পাইসজেটের একজন কর্মী মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। কিন্তু তারপরেও তিনি ওই কর্মীকে লাথি মারতে থাকেন।এরপরেই দেশজুড়ে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় শিল্প সুরক্ষা বাহিনী (সিআইএসএফ) জানিয়েছে যে তাদের কর্মীরা তৎক্ষণাৎ এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে যে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে সবরকমের সহায়তা প্রদান করা হবে।
আরও পড়ুন-উত্তরপ্রদেশের ভয়াবহ দুর্ঘটনা! খালে পড়ল গাড়ি, তিন শিশু-সহ ১১ জনের দেহ উদ্ধার
স্পাইসজেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'গত ২৬ জুলাই শ্রীনগর থেকে দিল্লিগামী ফ্লাইট এসজি-৩৮৬-এর বোর্ডিং গেটে একজন যাত্রী স্পাইসজেটের চারজন কর্মীকে লাঠি ঘুষি মেরে গুরুতরভাবে জখম করেন। বারবার লাথি, ঘুষির ফলে আমাদের কর্মীদের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। চোয়ালে গুরুতর আঘাত লাগে। স্পাইসজেটের একজন কর্মী অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যান। তারপরেও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া কর্মীকে ওই ব্যক্তি লাথি মারতে থাকেন। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া সহকর্মীকে সাহায্য করার জন্য যান আর একজন। তাঁকেও লাথি মারেন ওই ব্যক্তি। ওই কর্মীর নাক ও মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। আহত কর্মীদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।'
আরও পড়ুন-উত্তরপ্রদেশের ভয়াবহ দুর্ঘটনা! খালে পড়ল গাড়ি, তিন শিশু-সহ ১১ জনের দেহ উদ্ধার
জানা গিয়েছে, ওই যাত্রী একজন ঊর্ধ্বতন সেনা আধিকারিক। বিমান সংস্থা আরও জানিয়েছে, তিনি মোট ১৬ কেজি ওজনের দুটি কেবিন ব্যাগেজ বহন করছিলেন। এদিকে, এয়ারলাইন্সে ৭ কেজির বেশি কেবিন ব্যাগেজ নেওয়া যায় না। বিমান কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত লাগেজের কথা বিনীত ভাবে জানান। বলেন এই অতিরিক্ত লাগেজ নিতে গেলে চার্জ দিতে হবে। কিন্তু ওই সেনা আধিকারিক তা অস্বীকার করে এবং বোর্ডিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করেই জোর করে অ্যারোব্রিজে প্রবেশ করেন। এটি সম্পূর্ণ নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ। সিআইএসএফের একজন কর্মকর্তা তাকে গেটে ফিরিয়ে নিয়ে যান।এদিকে গেটের কাছে গিয়েও ওই যাত্রী ক্রমশ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। স্পাইসজেটের গ্রাউন্ড স্টাফের চার সদস্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন তিনি। স্থানীয় পুলিশের কাছে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং বিমান সংস্থাটি বেসামরিক বিমান চলাচল বিধি অনুসারে যাত্রীকে নো-ফ্লাই তালিকায় রাখার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এরমধ্যেই স্পাইসজেট তার কর্মীদের উপর খুনের হামলার বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছে। যাত্রীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।