তিন রাজ্যে অভিযান চালিয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্দেহভাজন ১৪ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশের বিশেষ দল। যার মধ্যে রাজস্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৬ জঙ্গিকে। রাজস্থান থেকে ধৃত এই ৬ জনের আল কায়দা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাদের যোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তারা দিনের পর দিন ধরে ওই এলাকায় যে প্রশিক্ষণ চালাচ্ছিল তা জানাই ছিল না স্থানীয়দের। এবিষয়টি জানতে পেরেই কার্যত বিস্মিত হয়েছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: আল কায়েদার সঙ্গে যোগের সন্দেহে গুজরাটে গ্রেফতার ৩ বাঙালি স্বর্ণকার, মিলল নথি
জানা গিয়েছে, রাজস্থানের ভিওয়াদির চোপাঙ্কি থানা এলাকার সারে কালান গ্রামের জঙ্গল এবং দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় কাজ করছিল এই আল কায়দার জঙ্গি মডিউল নেটওয়ার্ক। ওই জায়গায় তাঁবু খাটিয়ে থাকছিল এই জঙ্গিরা। তাদের থাকার জায়গাটি জলের বোতল এবং খাবারে ভর্তি ছিল। তাছাড়া, সেখান থেকে নিকটেই ছিল একটি ছোট জলপ্রপাত। সেই জলপ্রপাত থেকে অনায়াসেই তারা জল পেয়ে যেত। এরফলে তাদের ঘন ঘন বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। লোকালয় থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন জায়গায় ঘাঁটি গেড়েছিল এই জঙ্গিরা। তার ফলে তারা কোনওরকম বাধা ছাড়াই সেখানে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করতে পারত।
উল্লেখ্য, দিল্লি পুলিশ ৭ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অভিযান চালিয়ে গত বৃহস্পতিবার ওই ৬ জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশকে স্থানীয়রা জানান, দিল্লির ঠিকানা লেখা খাদ্য সামগ্রী এবং কার্টন বাক্স দেখেছেন। তবে তারা জানান গভীর জঙ্গলে তারা যান না। জঙ্গলে তারা গবাদি পশু চরায়। তবে সেখানে যে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো সেবিষয়ে তাদের জানা ছিল না। তারা কখনই গুলির শব্দ শোনেননি বা সন্দেহজনক বহিরাগতদের দেখেনি।
একজন স্থানীয় স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, গবাদি পশু চড়ানোর উদ্যেশ্যে তিনি প্রতিদিন পাহাড়ে ঘুরে বেড়ান। তবে কখনও সন্দেহজনক কিছু লক্ষ্য করেননি। ফলে মনে করা হচ্ছে, জঙ্গিরা অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে এই অপারেশন চালাত। জয়পুর রেঞ্জের আইজি জানিয়েছেন, যে বিষয়টির তদন্ত করা হচ্ছে। দিল্লি পুলিশ রাজ্যে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক নিয়ে রাজস্থান পুলিশকে কোনও তথ্য শেয়ার করেনি। তবে দিল্লি পুলিশ নিরাপত্তা ও সহায়তার জন্য অনুরোধ করেছিল।
ধৃতদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে আইজি বলেন, যে দিল্লি পুলিশ এই ধরনের কোনও তথ্য তাদের জানায়নি। সূত্রের খবর, দিল্লি পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে একটি একে-৪৭ রাইফেল, একটি এয়ার রাইফেল, একটি ০.৩৮-বোরের রিভলবার, একটি হ্যান্ড গ্রেনেড এবং ৬টি কার্তুজ উদ্ধার করেছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, এই সব জঙ্গিদের বড় সর কোনও নাশকতামূলক কাজের পরিকল্পনা ছিল। তা নিয়ে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।