'এটাই বিজেপির বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও স্লোগানের মিথ্যাচার।' এক পড়ুয়ার স্কুল ফি মুকুব বিতর্কে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দেগেছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব।সম্প্রতি সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর আইএএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন পূরণের জন্য আর্থিক সহায়তার আবেদন নিয়ে উত্তরপ্রদেশে রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। (আরও পড়ুন: পাক ISI গুপ্তচর জ্যোতিকে স্পন্সর করেছিল কেরলের বাম সরকার, জানা গেল RTI করে)
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে 'অপমান' মাস্কের, এক্স-এর মালিক বললেন…
জানা গেছে, পঙ্খুরি ত্রিপাঠী নামের এই ছাত্রীটির বাবা রাজীব কুমার ত্রিপাঠী একটি দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হওয়ার পর চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন। যার ফলে তাঁদের পরিবার বড় ধরনের আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে। এরপরেই পরিবারটি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে মেয়ের স্কুলের ফি মকুবের জন্য সাহায্য চেয়েছিল। আদিত্যনাথও আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, তাঁদের মেয়ের পড়াশোনায় কোনও বাধা আসবে না। কিন্তু এরপরেও নাকি ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়েটির ফি মকুব করতে রাজি হয়নি। (আরও পড়ুন: নাম না করে 'আমেরিকার নিন্দায় সামিল' মোদী, পালটা ভয় দেখালেন ট্রাম্প)
আরও পড়ুন: ভারতীয়দের সুখবর দিল এই মুসলিম দেশ, বড় সুযোগ পাবেন বাংলাদেশিরাও, জানুন বিশদে...
কিন্তু সপ্তম শ্রেণির এই ছাত্রী জানিয়েছে, স্কুল কর্তৃপক্ষ তার ফি মকুব করতে রাজি হয়নি এবং বলেছে যে তাদের নাকি এমন কোনও ফি মুকুবের নিয়ম নেই। এই ঘটনায় সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেন এবং মেয়েটির পড়াশোনার খরচ বহন করার প্রস্তাব দেন। যদিও পঙ্খুরির পরিবার এখনও আশা করছে যে, মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করবেন এবং তার স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করবেন।পঙ্খুরি ত্রিপাঠী গোরক্ষপুরের পাক্কিবাগে সরস্বতী শিশু মন্দিরে পড়াশোনা করে। আরএসএস-এর শিক্ষা শাখা বিদ্যা ভারতী দ্বারা পরিচালিত এই স্কুলটি সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক ১,৬৫০ টাকা ফি নেয়। এই মুহূর্তে পঙ্খুরির প্রায় ১৮,০০০ টাকা বকেয়া রয়েছে।
এনডিটিভি-কে পঙ্খুরি বলে, 'আমি ফি মকুবের অনুরোধ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে একটি চকলেট দিয়েছিলেন এবং আশ্বাস দিয়েছিলেন যে এটি হয়ে যাবে। কিন্তু যখন আমি বাবার সঙ্গে স্কুলে গেলাম, তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। আমাদের বলা হয় যে, ফি মকুব করা যাবে না। তারা নাকি এও বলে, যদি আরও অভিভাবক ফি মকুবের আবেদন করেন, তাহলে স্কুল চালানো সম্ভব হবে না।’ পঙ্খুরি আরও বলে, 'আমার বাবা ভেঙে পড়েছিলেন। কেউ কখনও তাঁর সঙ্গে এমনভাবে কথা বলেনি। কিন্তু আমার বিশ্বাস, মুখ্যমন্ত্রী আমার স্বপ্ন ভেঙে যেতে দেবেন না। আমি কঠোর পরিশ্রম করব এবং একজন আইএএস অফিসার হব।'
বস্তুত গোরক্ষপুর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের একটি শক্তিশালী ঘাঁটি। তিনি গোরক্ষনাথ মঠের প্রধান পুরোহিত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পাঁচবার গোরক্ষপুরের সাংসদও নির্বাচিত হয়েছিলেন।অন্যদিকে, এই ঘটনায় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব পঙ্খুরির মন্তব্যের পর শাসক দলকে কটাক্ষ করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি বলেছেন, 'আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে তার পড়াশোনা বন্ধ হবে না। এটাই বিজেপির বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও স্লোগানের মিথ্যাচার। আমরা বিজেপিকে অনুরোধ করছি শিশুদের মিথ্যা না বলতে।' এরপরেই পঙ্খুরির বাবা রাজীব ত্রিপাঠী বলেন, 'তিনি টুইট করেছেন। কিন্তু আমরা মঠ এবং মহারাজ জি (যোগী আদিত্যনাথ)-র সঙ্গে যুক্ত। আমরা বিশ্বাস করি তিনি আমার মেয়ের পড়াশোনা নিশ্চিত করবেন।' যদিও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।