সীমান্ত সংঘাতের মাঝেই থাইল্যান্ডে বন্দুকবাজের হামলায় হুলুস্থূল পড়ে গিয়েছে।থাইল্যান্ডের রাজধানী শহর ব্যাংকক পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের একটি ভ্রমণ কেন্দ্র। সেই ব্যাংককেই এবার চলল এলোপাথাড়ি গুলি। যার জেরে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৬ জনের।
জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে ব্যাংককের জনপ্রিয় খাবারের বাজারে এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয়। গুলি লেগে ৫ জনের মারা যাওয়ার খবর সামনে এসেছে। কিন্তু নিহতের সংখ্যা ৬। নিহত ৬ জনের মধ্যে চারজন নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে শনাক্ত করা গিয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ব্যাংককের ব্যস্ত বাজারে অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই ব্যক্তি নির্মম গণহত্যার চালিয়ে নিজেও আত্মঘাতী হয়েছে।জানা যাচ্ছে, নিহত ছয় জনের মধ্যে রয়েছেন বাজারে কর্মরত চারজন নিরাপত্তারক্ষী, একজন মহিলা এবং একজন ওই বন্দুকধারী নিজে। থাইল্যান্ডের রাজধানীর একটি প্রধান এবং জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হল চাতুচাক বাজার। সেখান থেকে অল্প দূরে অবস্থিত অর টর কোর মার্কেটে এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।
আরও পড়ুন-'জুতো পেটা করব!' সচিবকে হুমকি বিধায়কের, বিহারে বাস্তবের 'পঞ্চায়েত'?
ব্যাংককের বাং সু জেলার উপ-পুলিশ প্রধান ওরাপাত সুকথাই সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত এই ঘটনাটিকে একটি গণহত্যা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। গণহত্যার পর বন্দুকধারী নিজে আত্মহত্যা করেছেন বলেও নিশ্চিত করেছে পুলিশ।উপ-পুলিশ প্রধান আরও বলেন, এই গণহত্যার সঙ্গে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে বর্তমান সীমান্ত সংঘর্ষের কোনও সম্ভাব্য যোগসূত্র রয়েছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।সূত্রের খবর, সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩৮ মিনিটের দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে।ঘটনার পর হামলাকারীকে বাজারের ভেতরে একটি বেঞ্চে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার পরনে ছিল কালো টি-শার্ট এবং ক্যামোফ্লাজ শর্টস। দেহের পাশে একটি ব্যাগ ছিল। পুলিশ একটি পরিচয়পত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স উদ্ধার করেছে।হামলাকারীর নাম নোই প্রাইডেন (৬১)। তিনি খোং জেলার নাখোন রাতচাসিমার বাসিন্দা।ঘটনার একাধিক ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করছেন এবং গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন-'জুতো পেটা করব!' সচিবকে হুমকি বিধায়কের, বিহারে বাস্তবের 'পঞ্চায়েত'?
গত ২৪ জুলাই কম্বোডিয়া এবং থাইল্যান্ডের মধ্যে তামুয়েন থম মন্দিরের কাছে এবং সুরিন, উবোন এবং রাতচাথানি সহ আশেপাশের এলাকাগুলিতে তাদের দীর্ঘ বিতর্কিত সীমান্তে ব্যাপক সংঘর্ষ চলেছে। একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের পর সংঘর্ষ শুরু হয়, যেখানে উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করে। উভয় পক্ষই একে অপরের দিকে ছোট অস্ত্র, কামান এবং রকেট গুলি চালায়, যার ফলে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন নিহত হয়। রাষ্ট্র পরিচালিত থাই পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিসের মতে, সংঘর্ষে ১১ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।থাইল্যান্ডে প্রিয়া ভিহিয়ার বা খাও ফ্রা বিহারন নামে একাদশ শতাব্দীর একটি হিন্দু মন্দিরের মালিকানা অধিকার নিয়ে ২০০৮ সালে এই দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তবে, বিতর্কিত স্থানটি ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত কম্বোডিয়ার কাছে হস্তান্তর করে, কিন্তু থাইল্যান্ড এখনও এর উপর অধিকার দাবি করে।