Wallace Line: মহাসমুদ্রের বহু অঞ্চল এখনও মানুষের কাছে রহস্যময়। যেমন বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল বা দক্ষিণ ভারত মহাসাগরের মতো গভীর গহীন মহাসাগর। তেমনই আরেক একটি রহস্যময় অঞ্চল হল ওয়ালেস লাইন। এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে দিয়ে অবস্থিত এই রেখা। নাহ চোখে দেখা যায় না এটি। ভূতত্ত্ববিদ আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেসের এই রেখাটি আঁকেন একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য দেখে। আর সেটিই সবচেয়ে অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য এই অঞ্চলের।
কেন রহস্যময় রেখা?
আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেসের প্রস্তাবিত এই কাল্পনিক জৈব-ভৌগোলিক সীমানা , যা এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রাণীকূলের মধ্যে একটি সীমানা নির্ধারণ করে রেখেছে। এই রেখার দুই পাশে দুই ধরনের প্রাণীকূল দেখা যায়। আশ্চর্যের বিষয় অবশ্য অন্য। জলজ হোক স্থলজ প্রাণী, কেউই এই সীমারেখা পেরিয়ে পৌঁছাতে পারে না অন্য পারে। আর সেখানেই লুকিয়ে আসল রহস্য। ওয়ালেস লাইন আদতে একটি কাল্পনিক রেখা। এই রেখাটি বোর্নিও এবং সুলাওয়েসির মধ্য দিয়ে এবং বালি ও লম্বক সামুদ্রিক অঞ্চলের মধ্য দিয়ে চলে গেছে। বহু প্রাণী ও প্রজাতির জন্য জৈবিক সীমানা হিসেবে কাজ করে এই রেখা।
আরও পড়ুন - ভিত ক্ষয়ে যাচ্ছে গোটা উত্তর আমেরিকার, আর কতদিন টিকবে? কী বলছে গবেষণা
কেন এই রেখাটি গুরুত্বপূর্ণ?
ওয়ালেসের মত অনুযায়ী, এটি জীববৈচিত্র্যের উপর ঐতিহাসিক, ভূতাত্ত্বিক এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব তুলে ধরে। এই রেখা দেখিয়ে দেয়, কীভাবে বিভিন্ন প্রাণী প্রজাতির এলাকা বন্টন হয়। এই পদ্ধতি যে আদতে এলোমেলা নয়, বরং ভৌগোলিক বাধা দ্বারা নির্মিত, সেটাই প্রমাণ করে ওয়ালেসের রেখা।
কবে আঁকা হয় এই রেখা?
উনিশ শতকে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস প্রথম লক্ষ্য করেন প্রাণীকূলের মধ্যে তফাত। এশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য নিকটবর্তী দ্বীপপুঞ্জে যাওয়ার সময় জীবের গঠনে আমূল বদল লক্ষ করেছিলেন তিনি। যার ভিত্তিতে তিনি এই রেখা আঁকার প্রস্তাব করেছিলেন।
আরও পড়ুন - হলুদ সতর্কতা জারি করল ভারতের আবহাওয়া দফতর, রইল তীব্র গরমে সুস্থ থাকার টিপস
কীভাবে কোথা দিয়ে আঁকা এই রেখা?
এই লাইনটি বালি এবং লম্বকের মধ্য দিয়ে লম্বক প্রণালীর মধ্য দিয়ে চলে গেছে এবং বোর্নিও এবং সুলাওয়েসির মধ্য দিয়ে মাকাসার প্রণালীর মধ্য দিয়ে উত্তরে প্রসারিত হয়েছে।
কোথায় কোন প্রাণীকূল?
ওয়ালেস রেখার পশ্চিম দিক বরাবর এশিয়ার সাধারণ প্রজাতি দেখতে পাওয়া যায়। বাঘ, হাতি এবং গন্ডারের মতো স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখতে পাওয়া যাবে এই অঞ্চলে। রেখার পূর্ব দিক বরাবর রয়েছে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ গিনির বিভিন্ন স্থলজ ও জলজ প্রজাতি। যেমন মার্সুপিয়াল এবং মনোট্রেম (প্লাটিপাসের মতো প্রাণী) দেখতে পাওয়া যায়।