একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার-জয়ী পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তী অসুস্থ দীর্ঘদিন ধরে। ৭৬ বছর বয়সী এই মানুষটা শুধু যে টলিউডের তারকাদের স্মৃতির পাতা থেকে ক্ষীণ হয়ে এসেছেন তেমনটা নয়, এখন আর সেভাবে খোঁজ রাখে না পরিবারও। এপ্রিল মাসের পাঁচ তারিখ নিজের বাড়িতেই পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। কোমর ও ডান পায়ে আঘাত পান। ভেঙে যায় হাড়। এরপর দীর্ঘসময় হাসপাতালে ভর্তি থেকে চলে চিকিৎসা। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন লম্বা সময়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ‘বেড সোর’ এবং সিওপিডি ধরা পরেছিল উৎপলেন্দুর।
তবে বর্ষীয়ান এই মানুষটা এখনও সেরে উঠতে পারেননি পুরোপুরি। শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে চক্কর কাটতে হচ্ছে। এতদিন তাঁর একটি ছবি সামনে আসে। যেখানে দেখা যায়, শরীর একেবারে ভেঙে গিয়েছে। বসে আছেন হুইলচেয়ারে। এই হাসপাতালে অর্থপেডিক বিভাগে আপাতত চিকিৎসা চলছে তাঁর।
আরও পড়ুন: পরিবার নিয়ে ছুটিতে দাদা! সানা-ডোনাকে নিয়ে কোথায় দেখা মিলল ‘মহারাজ’ সৌরভের
দীর্ঘদিন ধরেই উৎপলেন্দুর দেখভালের সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন অর্ঘ্য মুখোপাধ্য়ায়। দেড় বছর ধরে রাজ্য় সরকারের দেওয়া ফ্ল্যাটে থাকেন উৎপলেন্দু। অর্ঘ্যই ‘সন্তানের মতো’ দেখভাল করেন, সেই বর্ষীয়ান মানুষটার।
আশির দশকে ‘ময়নাতদন্ত’, ‘চোখ’, ‘দেবশিশু’র মতো একাধিক চর্চিত ছবির পরিচালক উৎপলেন্দু। ১৯৮২ সালে ‘চোখ’ ছবিটি সেরা চলচ্চিত্রের জাতীয় পুরস্কার জিতে নেয়। আর উৎপলেন্দু পান সেরা পরিচালক হিসেবে জাতীয় পুরস্কার। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার, এনএফডিসি-র স্বর্ণপদকও পেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ফিরছেন রাঙা বউ-এর গৌরব, জি বাংলার পুবের ময়না সিরিয়ালে কোন নায়িকা থাকছে?
তবে ব্যক্তিগত জীবনে অনেক ওঠাপড়া। বহুদিন আগেই ঘর ছেড়েছে দ্বিতীয় স্ত্রী শতরূপা সান্যাল। দুই মেয়ে ঋতাভরী আর চিত্রাঙ্গদা চক্রবর্তী মানুষ হয়েছে মায়ের কাছেই। আজ আর বাবার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই দুই মেয়ের। প্রাক্তন স্বামীর খোঁজ রাখেন না শতরূপা নিজেও। বছর দুই আগেও যখন উৎপলেন্দুকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল, শতরূপা জানিয়েছিলেন, এই মানুষটা একসময় রোজই শারীরিক নির্যাতন করত তাঁর উপর। মদ খেয়ে বাড়ি এসে দিনের পর দিন চলত সেই মারধর। আর তারপর নিজেকে, আর নিজের দুই মেয়েকে বাঁচাতেই ঘর ছেড়েছিলেন।
এপ্রিল মাসে ঋতাভরী চক্রবর্তী হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে স্পষ্ট জানান, ‘গত ৩০ বছরে তো উনি আমাদের কোনও খোঁজ নেননি। সবাই আমাদের পিছনে এরকমভাবে পড়েছে কেন জানি না। ওঁর তো আরেকটা বউ-বাচ্চা আছে। তাদের পিছনে পড়ুক। ওঁর তো একটা বিয়ে নয়। দুটো বিয়ে। ওঁর আগের স্ত্রী ইন্দ্রাণী। ছেলে গোগোল। তাঁদের পিছনে পড়ুক না লোক। ৩০ বছরে তো লোকটার মুখই দেখলাম না।’