ফেসবুকের হাত ধরে বড় ঘোষণা করলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। সাফ জানিয়েছেন এবার থেকে তিনি আর কোনও ছবির প্রিমিয়ারে যাবেন না। নিজেরও না, অন্যের ছবিরও না। কিন্তু কেন? এমন কেন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বস্তিকা?
একটা নয়। কোনও ছবির প্রিমিয়ারে না যাওয়ার জন্য একধিক কারণ তুলে ধরেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। কী সেই কারণগুলি?
লম্বা পোস্টে পয়েন্ট করে কারণগুলি তুলে ধরেছেন স্বস্তিকা। তিনি লেখেন, ‘কারণ অনেক।’
১) ' প্রিমিয়ারে ভিড় বা তারপরের দিন কাগজে কভারেজ দেখে বা তৎক্ষণাৎ সামাজিক মাধ্যমে রিলস দেখে, সিনেমাটা দেখব কিনা এটা কোনও দর্শক নির্ধারণ করেন না। করেন ছবির টিজার, ট্রেলার, পোস্টার দেখে, বা যদি ছবির কলাকুশলী দেখে তাদের সিনেমাটা দেখতে ইচ্ছে করে।
আমরা যথেষ্ট প্রচার করি, সেটা মানুষ কে জানান দেওয়ার জন্যই যে এই কাজটা আসছে।'
২) ‘অর্ধেক সময়েই ক্রিউ মেম্বারদের ডাকা হয়না। হয়তো HOD দের সেই সম্মান প্রাপ্তি হয়, তাই বলে সব ডিপার্টমেন্টের এর HODদের যে ডাকা হয় তাও নয়।’
ক্ষুব্ধ স্বস্তিকা লিখেছেন, 'যে প্রোডাকশন দাদারা গোটা সিডিউল এ মুখের কাছে জল, চা, খাবার ধরল, গরমের দিনে গ্লুকোজ গুলে নিয়ে এলো, মাঝ রাতে Thumbs Up আনতে ছুটল তাকে প্রিমিয়ার এ নেমন্তন্ন করাটা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়।
বাবার সঙ্গে বাবার অনেক ছবির স্পেশাল স্ক্রিনিং এ গেছি। টগরি দেখতে গেছিলাম নবীনা প্রেক্ষাগৃহে। বাবা এবং সন্ধ্যা রায় ছিলেন সেই ছবিতে। সেখানে সকল কাস্ট ক্রিউ কেই ডাকা হত।পরিচালক থেকে হিরো এবং যে জামাকাপড় ইস্তিরি করেছে তাকেও। শুধু দেখনদারীতে এসে ঠেকেছে সব। আর খাপ খাওয়ানো যাচ্ছেনা। এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বাড়ি ফেরার চেয়ে পরে নাহয় টিকিট কেটে দেখে নেব। এমনিও অন্যদের সিনেমা টিকিট কেটেই দেখি। এবার থেকে নিজেরটাও তাই করব।'
৩) 'সবার হাতে ফোন। সমস্ত ফুটেজ ওই ফোন এই তোলা হচ্ছে। কে আসলে মিডিয়া, আর কে ব্লগার, ইনফ্লুয়েন্সার, ভ্লগার বোঝার উপায় নেই। কেনই বা তাদেরকে বাইট দেবো বা তাদের ফোনে বন্দি হব জানিনা। হঠাৎ করে এই শহরে সবাই পাপারাজ্জি।'
আর কোনও ডেকরাম নেই, কোনও নির্ধারিত জায়গা নেই যেখানে মোবাইল হাতে ফটোগ্রাফাররা দাঁড়াবেন, সবাই গায়ের ওপর উঠে পরে, পারলে নাকের ফুটোর মধ্যে মোবাইল গুঁজে দিতে পারলেই ব্যাস বেস্ট রিলটা বানিয়ে ফেলবে। আমার ছবি তুলতে গিয়ে সেদিন ট্রেলার লঞ্চে কেউ একটা আমাকেই ধাক্কা মেরে ফেলে দিল।'
স্বস্তিকার সাফ কথা, ‘এত ঠ্যালাঠেলি ধাক্কাধাক্কি পোষায় না। আমি বাউন্সার নিয়ে ঘুরতে অক্ষম, সক্ষম হতে চাই না। রাস্তা ঘাটে শুটিং করতে লাগে ঠিকই কিন্তু তার বাইরে নিজের সিনেমা দেখতে গিয়ে যদি পেছনে বাউন্সার নিয়ে যেতে হয় কারণ মানুষ গায়ে উঠে পড়বেই তাহলে সেখানে না যাওয়াই ভালো। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, ব্যক্তিগত ডিসিশন।’
সবশেষে লিখেছেন, ‘আমায় আর নেমন্তন্ন করবেন না। মুখের ওপর না বলতে না পারলে হাসি মুখে কাটিয়ে দেবো। আমি যে ছবিতে কাজ করব, জীবন উজাড় করে তার প্রচার করব। প্রিমিয়ারে পৌঁছে এক হাজারটা বাইট আর আরও কয়েক শো সেলফি আর বাজে ছবি তুলতে পারছিনা।’